• ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২১শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

এবার পাগলা মসজিদ দানবাক্সের তিন কোটি ৬০ লাখ টাকা ২৩৬ জনের গুনতে লাগলো ১০ ঘণ্টা

bilatbanglanews.com
প্রকাশিত জুলাই ৩, ২০২২
এবার পাগলা মসজিদ দানবাক্সের তিন কোটি ৬০ লাখ টাকা ২৩৬ জনের গুনতে লাগলো ১০ ঘণ্টা

 

বিবিএন ডেস্ক:কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানসিন্দুক থেকে এবার তিন কোটি ৬০ লাখ ২৭ হাজার ৪১৫ টাকা পাওয়া গেছে। গতকাল শনিবার সকাল ৮টায় মসজিদের ৮টি দানসিন্দুক খোলার পর সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত টাকা গণনা শেষে এই হিসাব পাওয়া যায়। মোট ২৩৬ জন মানুষ একটানা ১০ ঘণ্টা এই টাকা গণনার কাজ করেন। বিপুল পরিমাণ দানের এই নগদ টাকা ছাড়াও বিভিন্ন বৈদেশিক মুদ্রা ও দান হিসেবে বেশকিছু স্বর্ণালঙ্কার পাওয়া গেছে। এর আগে সর্বশেষ গত ১২ই মার্চ দানসিন্দুক খোলা হয়েছিল। তখন সর্বোচ্চ তিন কোটি ৭৮ লাখ ৫৩ হাজার ২৯৫ টাকা পাওয়া গিয়েছিল। সাধারণত তিন মাস পর পর পাগলা মসজিদের দানসিন্দুক খোলা হয়। এবার ৩ মাস ২০ দিন পর দান সিন্দুক খোলা হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, শনিবার সকাল ৮টায় জেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণের উপস্থিতিতে মসজিদের ৮টি দানসিন্দুক খোলা হয়। তবে ৮টি দানসিন্দুকের মধ্যে ৬টি দানসিন্দুকই খোলার অন্তত ১৫ দিন আগেই পূর্ণ হয়ে যাওয়ায় সেগুলোতে দান গ্রহণ বন্ধ রাখা হয়েছিল।

দানসিন্দুক থেকে টাকা খুলে প্রথমে বস্তায় ভরা হয়। এবার বড় বস্তায় ১৬ বস্তার কিছু বেশি টাকা হয়েছে। এরপর শুরু হয় দিনব্যাপী টাকা গণনা। টাকা গণনায় মসজিদ ও মাদ্রাসার ১৩২ জন ছাত্র, রূপালী ব্যাংকের ৭০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং ৩৪ জন মসজিদ ও মাদ্রাসার কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ মোট ২৩৬ জন অংশ নেন। পাগলা মসজিদের মালামাল সংরক্ষক মো. বিল্লাল হোসেন জানান, প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ মসজিদের দানসিন্দুকগুলোতে নগদ টাকা-পয়সা ছাড়াও স্বর্ণালঙ্কার দান করেন। দানসিন্দুকে দান করা ছাড়াও মসজিদের নিলামঘরে প্রতিদিন মানুষ নানা ধরনের জিনিসপত্র দান করেন। এসবের মধ্যে রয়েছে গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি, ফল-ফলাদি, কোরআন শরীফ ইত্যাদি। নিলামঘরে প্রতিদিন এসব নিলামে বিক্রি করে দেয়া হয়। পাগলা মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শওকত উদ্দীন ভূঞা জানান, সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ এ মসজিদে দান করেন। তাদের বিশ্বাস, এখানে দান করলে রোগ-ব্যাধি থেকে মুক্তির পাশাপাশি মনের বাসনা পূরণ হয়। এই বিশ্বাস থেকেই দূর-দূরান্তের মানুষও এখানে দান করতে ছুটে আসেন।মজার বিষয় হচ্ছে, দানসিন্দুক খুললে চিঠি-পত্রও পাওয়া যায়। সেসব চিঠিতে দানকারীরা নিজেদের মনের বাসনার কথা লিখে দেন। টাকা গণনা কার্যক্রম তদারকির দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা জানান, পাগলা মসজিদের দানসিন্দুক খুলে পাওয়া টাকাগুলো রূপালী ব্যাংকে জমা করা হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন দেশের মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কার পাগলা মসজিদের দানসিন্দুকে জমা পড়েছে। ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদ কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম বলেন, এখানে ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ নামাজ পড়তে আসেন। সারা বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশের বাইরে থেকেও লোকজন আসেন এবং তারা দান করে থাকেন। আমাদের এখানে এখন স্থান সংকুলান হচ্ছে না, অনেক কষ্টের মধ্যে মুসল্লিরা নামাজ পড়ছেন। আমরা মসজিদ কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এখানে একটি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন মসজিদ ও ইসলামিক কমপ্লেক্স করবো। যেখানে একসঙ্গে ৩০ হাজার মুসল্লি নামাজ পড়তে পারবেন। নারীদের জন্যও থাকবে নামাজের ব্যবস্থা। অচিরেই এর নির্মাণকাজ শুরু হবে।