• ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২১শে মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি

পানি কমলেও উদ্বেগ আতংক কাটেনি সুনামগঞ্জের কৃষকদের

bilatbanglanews.com
প্রকাশিত এপ্রিল ৯, ২০২২
পানি কমলেও উদ্বেগ আতংক কাটেনি সুনামগঞ্জের কৃষকদের

লতিফুর রহমান রাজু, সুনামগঞ্জ: সীমান্তের ওপার থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আসা বন্ধ থাকার ফলে সুনামগঞ্জের নদ নদী ও হাওরের পানি কমতে শুরু করেছে। কিন্ত সুনামগঞ্জের কৃষকদের উদ্বেগ ও আতংক কাটছে না। ফসল হারানোর ভয়ে জমির কাঁচা পাকা ধান কাটতে শুরু করেছেন অনেকেই।  গত এক সপ্তাহের প্রবল ঢলে সুনামগঞ্জ জেলার ১৫টি হাওরের অন্তত ৫ হাজার হেক্টর জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস ও বন্যা সতর্কীকরন কেন্দ্রের মতে আগামী ৪৮ থেকে ৭২ ঘন্টার মধ্যে ভারতের মেঘালয়ে ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই খবরে সুনামগঞ্জ জেলার হাওর পাড়ের কৃষক দের মাঝে আবার আতংক দেখা দিয়েছে। গত কদিন সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফলে কিছু ক্ষতিগ্রস্ত হলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসে। তাই হাওর পাড়ের কৃষক গণ জমির কাঁচা ও আধা পাকা ধান কাটতে শুরু করেছেন ফসল হারানোর ভয়ে। তাদের মতে নিজে না খেতে পারলেও গবাদি পশুর খাদ্য তো যোগাড় হলো। সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার মোল্লা পাড়া ইউনিয়নের দেখার হাওর পাড়ের আব্দুল্লাহ পুরের বাসিন্দা কৃষক মঙ্গল মিয়া বলেন অনেক কষ্ট করে অন্যের কিছু জমি বর্গা চাষ করেছিলাম। আশা ছিল ধান ঘরে তোলে আগামী ঈদ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সুন্দর ভাবে করব। কিন্ত পানি আসার আতংকে কাঁচা আধা পাকা ধান কাটতে বাধ্য হচ্ছি।  একই এলাকার দড়িয়াবাজ গ্রামের কৃষক জইন উদ্দিন বলেন পানি আসার খবর শুনে তাড়াহুড়ো করে ধান কাটার প্রস্তুতি নিচ্ছি কারণ নিজে না খেতে পারলে ও গরু বাছুর তো খেতে পারবে।
গতকাল শুক্রবার সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার এরালিয়া কোনা হাওরে পানি প্রবেশ করে ৪ হাজার একর জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরালিয়া কোনা হাওরের ফললিয়ার দাইর বাধঁ ভেঙে পানি প্রবেশ করেছে। টাঙ্গুয়ার হাওর পাড়ের মনদিয়াতা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সানজু মিয়া বলেন টাঙ্গুয়ার হাওরের তেরগর, কানদা পাড়া, বিনোদ পুর,মইয়া জুরি সহ অনেক গ্রামের কৃষক গণ সর্ব শান্ত হয়ে পড়েছেন। মইয়াজুরি গ্রামের কৃষক নুরুল হক বলেন এই হাওরটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতার বাইরে। প্রতি বছরই ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে বাধঁ নির্মাণ করা হয়। গত কদিন এলাকার সর্ব স্তরের মানুষ সম্মিলিত ভাবে কাজ করে হাওরটি টিকিয়ে রাখতে সক্ষম হই কিন্ত শেষ রক্ষা হয়নি। সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম বলেন গত কদিন ঝুঁকিপূর্ণ ক্লোজার ও বাধঁ নির্মাণ কাজ সবাই ঐক্যবদ্ধ ভাবে করে স্বাভাবিক অবস্থায় নিয়ে আসি  আবার আবহাওয়ার পূর্বাভাস ভারতের মেঘালয়ে বৃষ্টিপাত হওয়ার খবর দেয়ার সংবাদে শংকায় আছি।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন জানান গত কদিন ইউএনও ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্ম কর্তা এবং সাধারণ কৃষক মিলে বাধঁ রক্ষার কাজ করে ঝুঁকি মোকাবিলা করি। এ পর্যন্ত যেসব হাওরে বাঁধ ভেঙে ফসলের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের তালিকা প্রস্তুত করে প্রণোদনা প্রদান করা হবে। কৃষকদের সব ধরনের সহায়তা প্রদান করা হবে বলেও জানান তিনি।