• ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২১শে মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি

সুনামগঞ্জে পুলিশের নির্যাতনে মৃত্যুর অভিযোগে পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা,পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ

bilatbanglanews.com
প্রকাশিত মার্চ ২, ২০২২
সুনামগঞ্জে পুলিশের নির্যাতনে মৃত্যুর অভিযোগে পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা,পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জে পুলিশের নির্যাতনে উজির মিয়া নামের এক যুবকের মৃত্যুর অভিযোগে দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা গ্রহণ করেছেন আদালত। মামলাটি গ্রহণ করে তদন্ত করে রিপোর্ট প্রদানে জন্য বাংলাদেশ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশ (পিবিআই) এর পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।বুধবার (০২ মার্চ) দুপুরে
মামলার বাদী উজির মিয়ার ভাই ডালিম মিয়ার জবানবন্দী গ্রহণ শেষে এই আদেশ দিয়েছেন সুনামগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ ওয়াহিদুজ্জামান শিকদার।
এর আগে গত সোমবার দুপুরে উজির মিয়ার ভাই ডালিম মিয়া বাদী হয়ে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আদালতে দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করেছিলেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে সদ্য ক্লোজড হওয়া শান্তিগঞ্জ থানার সাবেক এসআই দেবাশীষ সূত্রধর ও শান্তিগঞ্জ থানার এস আই আলাউদ্দিনকে। মামলাটি পিবিআইয়ের তদন্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী ও জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাড. রোকেস লেইস। তিনি বলেন, ‘উজির মিয়াকে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগে আদালতে দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলাটি পিবিআইয়ের তদন্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।তিনি বলেন, ‘উজির মিয়াকে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগে আদালতে দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আমরা গত সোমবার মামলার আবেদন করেছিলাম। আদালত আজ বাদীর জবানবন্দী গ্রহণ শেষে পিবিআইয়ের পুলিশ সুপারকে তদন্তের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। আমাদের দাবি এই ঘটনার সাথে জড়িত অপরাধীদের যেন শাস্তি নিশ্চিত হয়। ’   মামলার বাদী উজির মিয়ার ভাই ডালিম মিয়া বলেন,‘ আমার নির্দোষ ভাইকে চোর অপবাদ দিয়ে মির্মভাবে পুলিশ নির্যাতন করে মেরে ফেলেছে। দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আমরা আদালতে মামলা দায়ের করেছি। আশা করি আমরা আদালতের কাছে ন্যায় বিচার পাবো।’ এর আগে ২৭ ফেব্রুয়ারি রবিবার উজির মিয়াকে নির্যাতনের অভিযোগে শান্তিগঞ্জ থানার সাবেক এসআই দেবাশীষ সূত্রধরকে দিরাই থানা থেকে ক্লোজড করে সুনামগঞ্জ পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়। প্রসঙ্গত, শান্তিগঞ্জের শত্রæমর্দন গ্রামের বাসিন্দা উজির মিয়া ছোটখাটো ব্যবসা করতেন। গত ৯ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে গরু চুরির ঘটনায় উজির মিয়াকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায় শান্তিগঞ্জ থানার পুলিশ। এরপর থানায় নিয়ে তাঁর ওপর নির্যাতন চালানো হয়। পরদিন তাঁকে একটি চুরির মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠায় পুলিশ। ওই দিনই আদালত থেকে উজির মিয়া জামিনে ছাড়া পান। বাড়িতে আসার পর উজির মিয়ার সারা শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন দেখতে পান পরিবারের সদস্যরা। এরপর উজির মিয়া অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে সিলেটের এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে পাঁচ দিন চিকিৎসার পর কিছুটা সুস্থ হলে তাঁকে আবার বাড়িতে আনা হয়। গত ২১ ফেব্রুয়ারি সোমবার সকালে তিনি আবার অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে ছাতকের কৈতক হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এরপর ঘটনার সঙ্গে জড়িত পুলিশ সদস্যদের আইনের আওতায় আনার দাবিতে ওই দিন দুপুরে উপজেলার পাগলাবাজার এলাকায় লাশ নিয়ে সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন এলাকাবাসী। পরে প্রশাসন ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে উত্তেজিত লোকজনকে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। গত ২২ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার বিকেলে উজির মিয়ার স্বজন ও নির্বাহী ম্যাচিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ময়নাতদন্ত শেষে লাশ দাফন করা হয়। পুলিশের নির্যাতনে উজির মিয়ার মৃত্যুর অভিযোগের ঘটনায় সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসনের একটি ও পুলিশের পৃথক দু’টি কমিটি তদন্ত কাজ করছে।