• ২৮শে আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ১৩ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ৫ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

অবৈধ দখলদারদের হাত থেকে খাল পুনরুদ্ধার করতে নাগরিক ঐক্য দরকার- ডিসি সুনামগঞ্জ

bilatbanglanews.com
প্রকাশিত অক্টোবর ৩১, ২০২১
অবৈধ দখলদারদের হাত থেকে খাল পুনরুদ্ধার করতে নাগরিক ঐক্য দরকার- ডিসি সুনামগঞ্জ

নিজস্ব প্রতিবেদক: সুনামগঞ্জ শহরের প্রধানতম একটি খাল কামারখাল। এটি সুরমা নদীর পাশে উত্তর আরপিননগর থেকে পুরাতন বাসষ্ট্যান্ড, কালীবাড়ি, বাঁধনপাড়া ও নতুনপাড়া হয়ে জাউয়ার হাওরে গিয়ে মিশেছে। খালটির উৎসমুখেই গড়ে তোলা প্রাথমিক বিদ্যালয়। এখানেই খালটিকে মেরে ফেলা হয়েছে। এভাবেই শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অস্থায়ী স্থাপনা, স্থায়ী বসত ভিটা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, মাদ্রাসা, ক্লিনিক, কবরস্থান, মসজিদ ও বিদ্যালয় গড়ে তোলা হয়েছে। দখলে দুষণে খালটি ভরাট হয়ে যাওয়ায় বিলীন হয়ে গেছে। ফলে সামান্য বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার শহর ডুবে যায়। খালের আবর্জনা থেকে দুর্গন্ধ বাতাসে ভেসে উঠে। ক্রমশ: শহরের পরিবেশ ও সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে। পানির স্তর নীচে নেমে গেছে। শহরের পরিবেশ রক্ষায় কামারখালের উৎসমুখ আরপিননগর থেকে শেষ সীমানা জাউয়ার হাওর পর্যন্ত খনন করতে হবে। রোববার সকালে সার্কিট হাউসে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি বেলা’র আয়োজনে শহরের কামারখালসহ সকল জলাশয় পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণে নাগরিক সংলাপে বক্তারা এসব কথা বলেন। বেলা’র প্রতিনিধি আল আমিনের সঞ্চালনায় ও সাবেক অধ্যক্ষ মহিবুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংলাপে মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বেলা’র সিলেট বিভাগীয় সমন্বয়ক এডভোকেট শাহ সাহেদা আখতার। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বেলার নেটওয়ার্ক সুনামগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি সাংবাদিক জসিম উদ্দিন। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মো: জাহাঙ্গীর হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, স্থানীয় সরকারের উপ পরিচালক জাকির হোসেন, প্যানেল মেয়র আহমেদ নুর, হাওর বাঁচাও আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান, সুনামগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি লতিফুর রহমান রাজু। সংলাপে জেলা প্রশাসক বলেন, দেশে নদী-নালা, খাল-বিল দখলে দুষণে ভরাট হয়ে গেছে। সুনামগঞ্জ শহরের কামারখালও এর ব্যতিক্রম নয়। এছাড়া এ শহর পরিচ্ছন্ন নয়। কামারখাল উদ্ধারে পৌরসভাকে সীমানা চিহ্নিত করে উচ্ছেদের উদ্যোগ নিতে হবে। তারা জেলা প্রশাসক বরাবর উচ্ছেদের প্রস্তাবনা পাঠালে আমি সাত দিনের মধ্যে উচ্ছেদের নোটিশ পাঠাবো। এ শহরকে আগের রূপে ফিরে আনতে হলে খালটি পুণরুদ্ধার অতীব জরুরী বলে তিনি মন্তব্য করেন। প্যানেল মেয়র আহমেদ নুর বলেন, কামারখালির কারণে শহরে জলাবদ্ধতার সুষ্টি হয়। শহর ডুবে যায়। এ শহরকে বাঁচাতে হলে কামারখালটি পুণরুদ্ধার করা জরুরী। আমি পৌর মেয়রের সাথে কথা বলে খালটি উদ্ধারে ভূমিকা রাখব। বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান বলেন, এ খালটি এ প্রজম্মের লোকদের অচেনা। এটি শহরে জলাবদ্ধতার মুল কারণ। যারাই দায়িত্বশীল তারাই খালটি দখল করে রাখে। খালটি পুণরুদ্ধার করতে হলে পৌরসভা ও জেলা প্রশাসনের সমন্বিত উদ্যোগের প্রয়োজন আছে বলে তিনি মনে করেন। লতিফুর রহমান রাজু বলেন, এ খাল দিয়ে এক সময় নৌকা লঞ্চ চলাচল করত। মাছ আহরণ করতে পারতাম। বর্তমানে এ খালের চিহ্ন নেই। এ খাল ভরাটের কারণে বাসা বাড়িতে পানি ঢুকে। এ শহরের প্রাণ ফিরে আনতে কামারখালটি পৌরসভা ও জেলা প্রশাসনের প্রতি দাবি জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন পরিবেশ আন্দোলনের সভাপতি আবু নাছার, সুজনের সহ সভাপতি আলী হায়দার, সদর উপজেলা মহিলা চেয়ারম্যান নিগার সুলতানা কেয়া, জেলা পরিষদ সদস্য ফৌজিয়ারা শাম্মী, সেলিনা আবেদীন,সাংবাদিক মাহবুবুর রহমান পীর, সেলিম আহমদ তালুকদার, শাহজাহান চৌধুরী, সালেহীন শুভ, এমরানুল হক চৌধুরী, জাকির হোসেন , আমিনুল ইসলাম, মিজানুর রহমান খান, শহিদনুর, বাপ্পু। অনুষ্ঠানের আগে কামারখালের দখলে দুষণে ভরাট হয়ে যাওয়ার ভিডিও চিত্র তুলে তুলে ধরা হয়।