• ৪ঠা অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১৯শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১লা রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

ছাতকের গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাও ইউনিয়ন কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ

bilatbanglanews.com
প্রকাশিত আগস্ট ২৬, ২০২১
ছাতকের গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাও ইউনিয়ন কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ

 

বিশেষ প্রতিনিধি, ছাতক থেকে: ছাতকে রেলওয়ের জায়গায় একটি পুকুর লিজ নিয়ে দু’টি পক্ষের মধ্যে সৃষ্ট দ্বন্দ্বের কারণে এক পক্ষের লোকজন ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে হামলা করে ভাঙচুর করেছে। টেন্ডারে লিজ প্রাপ্তরা রেলওয়ের পুকুর দখল নিতে গিয়ে স্থানীয় জনতার রোষানলে পড়েন। এক পর্যায়ে ধাওয়া খেয়ে পালিয়ে এসে ওই দখলদাররা ইউনিয়ন অফিসে হামলা ও ভাঙচুর করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (২৫ আগস্ট) বিকেলে উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাঁও ইউনিয়ন অফিসে হামলা-ভাঙচুর ও এর আগে তকিপুর গ্রামে ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

জানা যায়, উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আখলাকুর রহমানের তকিপুরস্থ গ্রামের বাড়ির সামনে ছাতক-সিলেট রেলওয়ে সড়কের পাশে একটি পুকুর রয়েছে। চেয়ারম্যানের পূর্ব পুরুষরা রেলওয়ে বিভাগ থেকে জায়গা লিজ নিয়ে ভোগ দখল করে আসছিলেন অনেক আগ থেকে।

এক পর্যায়ে তারা নিজেদের এবং আশ পাশ মানুষের গোসল, রান্না-বান্নাসহ পানির বিশেষ প্রয়োজনে লিজকৃত জায়গায় পুকুর খনন করেন। কিন্তু সম্প্রতি কর্তৃপক্ষ ওই পুকুরটি টেন্ডার দিলে ছায়াদ আহমদ নামের এক ব্যক্তি লিজ পায়। ছায়াদ উপজেলার গোবিন্দনগর গ্রামের আজিজুর রহমানের ছেলে।

বুধবার ছায়াদকে তার পুকুর দখল বুঝিয়ে দিতে তকিপুর গ্রামের চেয়ারম্যান আখলাকের বাড়িতে যায় কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি টিম। সেখানে পৌঁছে তারা চেয়ারম্যানের সাথে আলাপ করেন কিন্তু টেন্ডার ও লিজের বিপরীতে আবেদনের যাবতীয় ডকুমেন্ট তুলে ধরেন আখলাক। এক পর্যায়ে কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান আখলাকুর রহমান জানান, প্রায় ৩০ বছর আগে তার চাচা হুসন আলী যৌথ পরিবার থাকাকালীন সময়ে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে জায়গাটুকু স্থায়ী ভাবে লিজ গ্রহণ করেছিলেন।

পরবর্তীতে ওই জায়গায় পুকুর খনন করেন। সে সময় থেকে পাঁচ বছর ও পরে তিন বছর পর পর কাগজ নবায়ন করে তারা ভোগ দখলে আছেন। কিন্তু ২০১৬ সালে কাগজ নবায়ন বন্ধ হয়ে পড়ে। ২০১৯ সালে তাদের অবহিত না করে কর্তৃপক্ষ টেন্ডারে নিয়ে যায় পুকুরটি। পরে ওই টেন্ডার বাতিলের জন্য তিনি আবেদন করেন রেলওয়ের কর্তৃপক্ষ বরাবরে। এ হিসেবে ভূ-কর্মকর্তা (চট্রগ্রাম)কে টেন্ডার বাতিলের জন্য একটি পত্র প্রেরণ করেন রেলওয়ের এক সিনিয়র সচিব। এসব যাচাই-বাছাই না করে জোর পূর্বক পুকুরটি দখল নেয়ার জন্য আসে তারা। এসময় সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান অলিউর রহমান চৌধুরী বকুলও তাদের সাথে ছিলেন। ইউপি চেয়ারম্যান বাড়িতে পৌঁছে রেলওয়ের কর্মকর্তাদের সাথে যৌক্তিক আলোচনা করেন। কিন্তু এর আগে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ঘটনাস্থল থেকে চলে যান। পরবর্তীতে ছায়াদ পক্ষ ব্যর্থ হয়ে ইউনিয়ন অফিসের চেয়ারম্যান কক্ষে প্রবেশ করে আসবাবপত্র ভাঙচুর, বঙ্গবন্ধুর ছবি ও ফাইলপত্র তছনছ সহ কার্যালয়ের বাহিরে ঝুলিয়ে রাখা বঙ্গবন্ধুর ছবি সম্বলিত জাতীয় শোক দিবসের ব্যনার দুটি ছিড়ে ফেলেছে। এ বিষয়ে ছায়াদ আহমদ জানান, তিনি রেলওয়ের পুকুরটি টেন্ডারে লিজ পেয়েছেন। ওই পুকুরটি দখল সমজিয়ে দেয়ার জন্য রেলওয়ে বিভাগ থেকে কর্মকর্তা ও সিলেট জিআরপি থানার একজন এএসআই এসেছিলেন। কিন্তু আখলাক চেয়ারম্যান দখল দিতে নানা অযুহাত দেখান। পরে সেখান থেকে তারা চলে আসার সময় গ্রামের লোকজন রাস্তায় তাদের উপর অতর্কিত হামলার চেষ্টা করেছে। তিনি ইউনিয়ন অফিসে হামলা, চেয়ারম্যানের কক্ষ ভাঙচুর ও বঙ্গবন্ধুর ছবি সম্বলিত কার্যালয়ের বাহিরে ঝুলিয়ে রাখা ব্যনার ছেড়ার অভিযোগটি অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, রাস্তায় তাদের উপর হামলার বিষয়টি গ্রামের মুরব্বিদের কথা মতো ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আখলাকুর রহমানের কাছে বিচার দেয়ার জন্য ইউনিয়ন অফিসে গিয়েছিলেন। ইউনিয়ন অফিসে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় সন্ধ্যায় ছাতক-দোয়ারাবাজার (সার্কেল) এএসপি বিল্লাল হোসেন, ছাতক থানার ওসি (তদন্ত) মিজানুর রহমান সহ একদল পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বিষয়টি স্থানীয় ভাবে নিস্পত্তির চেষ্টা চলছে।