• ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২১শে মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি

ছাতকে দ্রুত করোনার বিস্তৃতি লাভ,এক সপ্তাহে মৃত্যু ১২

bilatbanglanews.com
প্রকাশিত জুলাই ২৩, ২০২১
ছাতকে দ্রুত করোনার বিস্তৃতি লাভ,এক সপ্তাহে মৃত্যু ১২

ছাতক প্রতিনিধি: ছাতকে দ্রুত করোনার বিস্তৃতি লাভ করছে।গত এক সপ্তাহে এখানে করোনায় আক্রান্ত হয়ে অন্তত ১২ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। গত সোমবার (১৯জুলাই) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ৩৯ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পিসিআর ল্যাবে পাঠানো হয়।

গত মঙ্গলবার প্রাপ্ত রিপোর্টে করোনা পজেটিভ শনাক্ত হয় ১৫ জনের। একদিনে সংক্রমণের হার প্রায় ৩৯ শতাংশ। এদিকে উপজেলাজুড়ে অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে জ্বর, সর্দি-কাশি, গলাব্যথা ও শ্বাসকষ্টের রোগীর সংখ্যা। গত কয়েকদিনে হাসপাতালের বহির্বিভাগে ৬৫ শতাংশ জ্বরে আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নিয়েছে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। জ্বরে আক্রান্ত অধিকাংশ রোগীই করোনা পরীক্ষা ও হাসপাতালে যেতে অনীহা প্রকাশ করছে। যারা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যাচ্ছে

তারাও আবার করোনা পরীক্ষা করতে খুব একটা আগ্রহী নয়। জানা গেছে, উপজেলার প্রতিটি গ্রামে এমন ঘর কমই আছে যেখানে জ্বরে আক্রান্ত রোগী নেই। অধিকাংশ রোগীই গ্রামের ফার্মেসী থেকে ওষুধ কিনে সেবন করছেন। এসব রোগী করোনা শনাক্ত হলে সামাজিকভাবে হেয় হওয়ার ভয়ে করোনা পরীক্ষা কিংবা হাসপাতালে যাচ্ছেন না। এখানে দ্রুত করোনার বিস্তৃতি লাভের কারণে শংকিত হয়ে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। গত এক সপ্তাহে শিক্ষক আশরাফুল আম্বিয়া সোয়েদ, ইউপি সচিব দেলোয়ার হোসেন, কারখানা শ্রমিক শাহ আলকাব আলী, ব্যবসায়ী আব্দুস সাত্তার, গৃহিণী মিনতি রানি দাস করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। করোনা উপসর্গ নিয়ে ছাতক সদর ইউনিয়নে ১ জন, দোলারবাজার ইউনিয়নে ১ জন, জাউয়াবাজার ইউনিয়নে ১ জনসহ আরো কয়েকজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। ছাতক ও কৈতক হাসপাতাল থেকে করোনা আক্রান্ত রোগী সিলেট পাঠালে সেখানে কোনো হাসপাতালেই তারা ভর্তি হতে পারছেন না। ওই কারনে সিলেটের হাসপাতালে সিট খালি না পেয়ে অক্সিজেনের অভাবে ছাতকের এক রোগী মারা যায়। হাসপাতালের হিসাব অনুযায়ী এক সপ্তাহে এখানে আক্রান্তের সংখ্যা ৭৬৭ জন, সুস্থ হয়েছে ৬৭৬ জন, বাসায় চিকিৎসাধীন ৬৩ জন, অন্যান্যরা বিভিন্ন হাসপাতাল ভর্তি আছেন। দ্বিতীয় পর্যায়ে হাসপাতালে কোভিড-১৯ ভ্যাক্সিনের প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন ১ হাজার ৭০০ জন। এদিকে বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন আক্রান্তদের এমন অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে এ বিষয়ে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন। এর মধ্যে উপজেলা ইউআরসি ইন্সট্রাক্টর মোস্তফা আহসান হাবিবের স্ত্রী ও সন্তান রয়েছেন। নিটল-নিলয়, আকিজ প্লাস্টিক, লাফার্জ-হোলসিম কারখানার অনেক শ্রমিক করোনায় আক্রান্ত বলে জানা গেছে। নিটল-নিলয় কার্টিজ মিলে প্রায় ২০ জন করোনা আক্রান্ত। আক্রান্ত হয়ে ১০ জন শ্রমিক ছুটিতে গেছেন বলে জানা যায়। অন্যান্যরা কারখানা ও আশপাশ এলাকায় রয়েছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রাজীব চক্রবর্তী জানান, আক্রান্তের সংখ্যা দিন-দিন এখানে বেড়েই চলছে। আক্রান্ত হয়ে যারা সিলেটে চিকিৎসা নিচ্ছেন এবং মৃত্যুবরণ করছেন তাদের হিসাব এ হাসপাতালে নেই। আগে সিলেট থেকে মৃত্যুর হিসাব পাঠানো হতো। বর্তমানে এ পরিসংখ্যান হাসপাতালে দেওয়া হয়না। যার কারনে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারীর সঠিক হিসাব পাওয়া যাচ্ছেনা। দেশের বিভিন্ন এলাকায় হাসপাতাল ছাড়াও করোনা আইসোলেশন ইউনিট চালু করা হয়েছে। জরুরী ভিত্তিতে সিলেটে অন্তত ২০০ শয্যার একটি করোনা আইসোলেশন ইউনিট চালু করার জন্য তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।