• ১৩ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৯শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ১৮ই মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

সুনাম গঞ্জের শাল্লা থানার এসআইকে হত্যার চেষ্টা যুবলীগ নেতা অপুসহ আটক ৩ জন

bilatbanglanews.com
প্রকাশিত জুলাই ১৩, ২০২১
সুনাম গঞ্জের শাল্লা থানার এসআইকে হত্যার চেষ্টা যুবলীগ নেতা অপুসহ আটক ৩ জন
লতিফুর রহমান রাজু , সুনামগঞ্জ: সুনামগঞ্জ জেলার শাল্লা থানার এসআই শাহ আলীকে রাতের আধারে সন্ত্রাসী হামলায় হত্যা চেষ্টার   অভিযোগ।  সোমবার ১২ জুলাই দিবাগত রাত ১২.৩০ টায় শাল্লা থানা সংলগ্ন রাস্তায় এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যে জানা যায়, এসআই শাহ আলী থানা থেকে বের হয়ে বাসায় যাবার সময় যুবলীগ নেতা অরিন্দম চৌধূরী অপু ও তার সঙ্গীয় সন্ত্রাস প্রকৃতির ৭/৮ জন লোক দা, লোহার রড, লোহার পাইপ নিয়া অতর্কিত  হামলা চালায়। সন্ত্রাসী আক্রমনে এসআই শাহ আলী গুরুতর আহত হয়ে মাটিতে পড়ে চিৎকার করলে আশে পাশের লোকজনসহ থানার অন্যান্য পুলিশ সদস্যগণ আসিলে সন্ত্রাসীরা উল্লাস করতে করতে চলে যায়।

ওইসময় পুলিশ সদস্যরা আহত শাহ আলীকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেন।
তাদের ভাষ্যে আরো জানা যায়, এ ঘটনা ঘটানোর পরেও সন্ত্রাসীরা হাতে অস্ত্রসস্ত্র নিয়া থানা সদরের বিভিন্ন পয়েন্টে মহড়া দিতে দেখেন।
পরে শাল্লা থানা পুলিশ  যুবলীগ নেতা উপজেলার নাইন্দা গ্রামের অনিলবরন চৌধুরীর ছেলে অরিন্দম চৌধুরী অপু (৩৮), ঘুঙ্গিয়ারগাও গ্রামের নারুগোপাল রায়ের ছেলে রতন রায় (২৮) ও বাহাড়া গ্রামের মিষ্টলাল দাসের ছেলে সেন্টু দাস (২৩) কে গ্রেফতার করেন।
উপজেলা হাসপাতালে গিয়ে এসআই শাহ আলীর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ওইদিন ওসি সাহেব অনুপস্থিত থাকায় আমি সারাদিন অফিসিয়াল কাজ সেরে রাত প্রায় সাড়ে ১২ টায় থানা থেকে বের হয়ে বাসায় যাবার সময় অপুর সন্ত্রাসী বাহিনী দা, লোহার রড, পাইপ ইত্যাদি দিয়া অতর্কিতে আমার উপর হামলা চালায়। সন্ত্রাসীরা আমাকে দা দিয়া কুপাইয়া ও লোহার রড, পাইপ দিয়া এলোপাতারী বাইরাইয়া আমার কপালে রক্তাক্ত জখম ও কোমরসহ আমার হাতে- পায়ে ও হাতের আঙ্গুলে হাড়ভাঙ্গা জখম করে। কেনো আপনার উপর এ হামলা করেছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নোয়াগাও কান্ডে অপু তার ফেসবুকে বিতর্কিত ও উস্কানীমূলক একটি স্ট্যাটাস দিলে এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।  যার ফলে অপুর ভাই অমিতাভ চৌধুরী রাহুল এলাকার ১২/১৩ জনকে বিবাদী করে শাল্লা থানায় ইতিপূর্বে একটি সাধারন ডায়েরী করে। ডায়েরীর পর থেকেই অপু আসামী গ্রেফতার করার জন্য আমাকে চাপ দিয়ে আসছে।  কিন্তু বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশ না থাকায় আমি আসামী গ্রেফতার করিনি।  একারনে অপু আমার প্রতি ক্ষিপ্ত ছিল। বিভিন্ন সময়ে অপু আমাকে হুমকি ধামকি করতো এবং আমাকে দেখে নেবারও হুমকি দিয়েছিল ওই অপু।
প্রত্যক্ষদর্শী ঘুঙ্গিয়ারগাওয়ের রামিম চৌধুরী, কলেজ রোডের আনিসুল হক আনিস ও ঘুঙ্গিয়ারগায়ের  বাসিন্দা আনোয়ার হোসেনগণ জানান, অপু ও অপুর সন্ত্রাসী বাহিনী এসআই শাহ আলীকে কমান্ডো স্টাইলে মারধর করেছে। আমরা ফিরানোর চেষ্টা করলে আমাদেরকেও হুমকি দেয় ওই সন্ত্রাসী বাহিনী। তারা আরো জানান, সন্ত্রাসীরা এসআই শাহ আলীকে বেধরক মারধর করে রক্তাক্ত করে এবং পরবর্তীতে ওই সন্ত্রাসীরা থানা সদরের বিভিন্ন পয়েন্টে সসস্ত্র মহড়া দেয়। ওই সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে ও মহড়ায় কারা উপস্থিত ছিল জানতে চাইলে তারা বলেন, যুবলীগ নেতা অরিন্দম চৌধুরী অপু, ঘুঙ্গিয়ারগায়ের মৃত পঙ্কজ সরকারের ছেলে পলাশ সরকার পল্টু, নারুগোপাল রায়ের দুই ছেলে রতন রায় ও চন্দন রায়, ভাটগাও গ্রামের আজমান মিয়ার ছেলে আলেক মিয়া ও অজ্ঞাতনামা আরো ৪/৫ জন ওই সন্ত্রাসী হামলায় ও মহড়ায় যোগ দিয়েছিল।

সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মোঃ মিজানুর রহমান বিপিএম  জানান, অফিসার ইনচার্জ অনুপস্থিত ছিলেন তা সত্যি, দায়িত্বে ছিলেন সন্ত্রাসী আক্রমণের শিকার এসআই শাহ আলী। ইতিমধ্যেই ঘটনার সাথে জড়িত তিন জন কে আটক করা হয়েছে। আইনানুগ ব্যাবস্থা নেয়া হবে।