• ২রা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ১৮ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ৭ই মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

গোবিন্দগঞ্জ টু সুনামগঞ্জ রেললাইন বাস্তবায়নের দাবি জেলা আ.লীগের মন্ত্রী গ্রুপের নেতৃবৃন্দের

bilatbanglanews.com
প্রকাশিত জুন ২৮, ২০২১
গোবিন্দগঞ্জ টু সুনামগঞ্জ রেললাইন বাস্তবায়নের দাবি জেলা আ.লীগের মন্ত্রী গ্রুপের নেতৃবৃন্দের

 

দক্ষিণ সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি :: হাওরের জেলা সুনামগঞ্জ। পরিবহন সুবিধার অংশ হিসেবে রেলপথের উন্নয়ন এই জেলার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি।

জানা যায়, ২০১১ সালে তৎকালীন রেলমন্ত্রী প্রয়াত সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ছাতক-সুনামগঞ্জ-মোহনগঞ্জ রেলপথ স্থাপনের ঘোষণা দেন এবং পরে রেলওয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা কয়েক দফা এলাকাটি সরেজমিন পরিদর্শন ও সমীক্ষা করেন। কিন্তু রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত যখন দপ্তরবিহীন মন্ত্রী হন এরপর এই প্রকল্পটি আর আলোর মূখ দেখেনি।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে সুনামগঞ্জের মানুষের কথা চিন্তা করে জেলার মানুষের যাতায়াতের সুবিধার্তে রেললাইন সম্প্রসারণ কাজে হাত দেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান (এমপি)। মন্ত্রীর একান্ত প্রচেষ্টায় রেল যোগাযোগ থেকে বঞ্চিত সুনামগঞ্জের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি সুনামগঞ্জে রেললাইন স্থাপন প্রকল্পটি আলোর মুখ দেখে এবং তা বাস্তবায়নে দিকে এগিয়ে চলছে। গোবিন্দগঞ্জ টু সুনামগঞ্জ রেললাইন স্থাপন প্রকল্পের নতুন এ্যালাইনমেন্টও হয়ে গেছে। সুনামগঞ্জ-৩ আসনের সাংসদ ও পরিকল্পনামন্ত্রী আলহাজ্ব এম এ মান্নানের হাত ধরে এ কাজ এখন অনেকটা গতিও পেয়েছে।

জানা যায়, গোবিন্দগঞ্জ থেকে সুনামগঞ্জ সড়কে পুরো জেলার প্রায় ২০ লক্ষ মানুষের যাতায়াত। এছাড়া গোবিন্দগঞ্জ হতে ধারণ বাজার, কৈতক, জাউয়া বাজার, বড়কপন, ডাবর, পাগলা বাজার, শান্তিগঞ্জ বাজার, দিরাই রাস্তা পয়েন্ট এগুলো প্রত্যেকটি জনপ্রিয়, সুপরিচিত এবং জনগণের পয়েন্ট। তাই এদিকে রেললাইন সম্প্রাসরিত হলে বরং জনগণ বেশি উপকৃত হবেন। তাছাড়া ছাতকের বিশাল বাজার জাউয়া বাজার, জগন্নাথপুর, দ: সুনামগঞ্জ, দিরাই- শাল্লা, জামালগঞ্জ, সুনামগঞ্জ সদর বিশ্বম্ভরপুর তাহিরপুর সহ জেলার সবগুলো উপজেলার জনগণ এর প্রকৃত সুফল ভোগ করতে পারবেন। তাই সুনামগঞ্জের সর্বসাধারণের দাবী গোবিন্দগঞ্জ-সুনামগঞ্জ রেললাইন স্থাপণ করা হোক। জেলার মানুষের সুবিধার্থে সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগও এই সিদ্ধান্তের সাথে একাত্মতা পোষণ করেছে।

গত বুধবার (২৩ জুন) বিকেলে সুনামগঞ্জ পাবলিক লাইব্রেরীতে (শহীদ জগৎ জ্যোতি পাঠাগার) সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত সভাপতি) ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল হুদা মুকুটের সভাপতিত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭২ তম প্রতিষ্টা বার্ষিকী উপলক্ষে জেলা আওয়ামী লীগের এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি এড.আপ্তাব উদ্দিন, রেজাউল করিম শামীম, এড.অবনী মোহন দাশ, সৈয়দ আবুল কাশেম, সাবেক সহ সভাপতি এড.রইছ উদ্দিন, এড.আলী আমজদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক জুনেদ আহমদ, শংকর দাশ, আইন বিষয়ক সম্পাদক এড. আ. করিম, কৃষিবিষয়ক সম্পাদক ও তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান করুনা সিন্ধু চৌ: বাবুল, মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা নিগার সুলতানা কেয়া,শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক সীতেশ তালুকদার মনজু, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক আজাদুল ইসলাম রতন, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক জাহাঙ্গীর চৌধুরী,জেলা আওয়ামী লীগ সদস্য আবুল কালাম, অমল কর, কল্লোল তাং চপল, হাবুল চৌধুরী, দিরাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলম চৌধুরী, দিরাই পৌরসভার সাবেক মেয়র মোশারফ হোসেন, বিভিন্ন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ, পরিকল্পনা মন্ত্রীর ব্যক্তিগত রাজনৈতিক সচিব হাসনাত হোসেন সহ জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে আগত নেতৃবৃন্দ গোবিন্দগঞ্জ থেকে জাওয়া বাজার দক্ষিণ সুনামগঞ্জ হয়ে সুনামগঞ্জ পর্যন্ত রেললাইন স্থাপনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান এমপি ও রেলপথ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজনের কাছে জোর দাবী জানান।

বিদেশে অবস্থান করলেও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মতিউর রহমানও একই অভিমত ব্যক্ত করেন।

সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি রেজাউল করীম শামীম তার বক্তৃতায় বলেন, সভাপতি সাহেব টেলিফোনে গোবিন্দগঞ্জ থেকে জাউয়া বাজার দক্ষিণ সুনামগঞ্জ হয়ে সুনামগঞ্জ পর্যন্ত রেললাইন বাস্তবায়নের পক্ষে মতামত ব্যক্ত করেছেন।

রেজাউল করিম শামীম এবং এড. অবনী মোহন দাশ স্থানীয় সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন এবং জয়াসেন গুপ্তার সমালোচনা করে বলেন জামালগঞ্জ, ধর্মপাশা এবং দিরাই, শাল্লার জনগণের স্বার্থের বিরুদ্ধে সংসদ সদস্যগন অবস্থান নিয়েছেন। এখন দেখা যাচ্ছে এই কাজ যেনো না হয় এর পিছনে বড় ষড়যন্ত্রও করা হচ্ছে এবং কিচ্ছু স্বার্থান্বেষী মহল এই রেল লাইন যাতে না হয় এর পায়তারায় লিপ্ত হয়েছেন।

সভায় বক্তারা বলেন মহিবুর রহমান মানিক গোবিন্দগঞ্জ, বুরাইরগাও, জালালপুর, ধারন, বোকারভাঙ্গা, চৌকা, চেচান, রাউলী, কৈতক, জাউয়া, দক্ষিণ ছাতক, উত্তর ছাতক তথা ছাতক বাসীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন।
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান মীসবাহ বিশ্বম্ভপুর এবং সুনামগঞ্জ সদরের জনগণের বিরুদ্ধে গিয়ে আমবাড়ীর পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন যেখানে সুরমা ব্রীজ সংলগ্ন রেল আসলে দুই উপজেলাসহ তাহিরপুর উপজেলার মানুষের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছায়।

দিরাই রাস্তা পয়েন্ট মদনপুর হয়ে রেল লাইন স্থাপিত হলে দিরাই, শাল্লা, জামালগঞ্জ, ধর্মপাশা প্রভৃতি উপজেলার মানুষ দিরাই রাস্তা পয়েন্ট মদনপুর স্টেশন ধরে রেলের আওতায় আসতে পারবেন। এছাড়াও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সুনামগঞ্জ টেক্সটাইল ইন্সটিটিউট এবং বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক এবং বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট লোকেরা রেলে সহজ যাতায়াত করতে পারবেন।