বিবিএন ডেস্ক: রাজধানীর কদমতলীতে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে মা-বাবা ও বোনকে হত্যা করেছেন বড় মেয়ে মেহজাবিন ইসলাম মুন। তবে অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেছেন ঘাতকের স্বামী ও সন্তান।
ঘটনার পর মেহজাবিনকে আটক করেছে কদমতলী থানা পুলিশ। শনিবার দুপুরে তাকে আটকের পর থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
আজ সকালে মুরাদপুর এলাকার ২৮, লালমিয়া সরকার রোডের ছয় তলা বাড়ির দ্বিতীয় তলা থেকে মেহজাবিনের মা মৌসুমী ইসলাম (৪০) বাবা মাসুদ রানা (৫০) ও বোন জান্নাতুলের (২০) লাশ উদ্ধার করা হয়।
আর আহত অবস্থায় মেহজাবিনের স্বামী শফিকুল ইসলাম ও তার আগের ঘরের মেয়ে মারজান তাবাসসুম তৃপ্তিয়াকে (৬) ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, রাতে পরিবারের সবাইকে ঘুমের ওষুধ খাওয়ান মেহজাবিন। সবাই অচেতন হয়ে পড়লে মা-বাবা ও বোনকে রশি দিয়ে বেঁধে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। স্বামী ও শিশু সন্তানকে ঘুমের ওষুধ খাওয়ানো হয়েছিল। তবে তারা অল্পের জন্য বেঁচে গেছে।
ঘাতকের চাচাতো বোন শিলা বলেন, মেহজাবিন তার পরিবারের সবাইকে শেষ করে দিতে চেয়েছিল। সে তার আগের ঘরের স্বামীকেও খুন করেছিল। সেই মামলায় মেহজাবিনসহ তার নিহত বাবা-মা ও বোনের জেল হয়েছিল। পাঁচ বছর জেল খেটে তারা জামিনে ছাড়া পায়।
তিনি আরও বলেন, গত দুদিন আগে স্বামী সন্তানকে নিয়ে মায়ের বাড়িতে বেড়াতে আসে মেহজাবিন। এসেই তার ছোট বোনের জান্নাতুলের সঙ্গে তার স্বামীর পরকীয়া রয়েছে বলে বাবা-মাকে অভিযোগ করে। এ নিয়ে অনেক কথা কাটাকাটি হয়। তার জেরেই হয়তো এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।
এছাড়া প্রতিবেশীর জানিয়েছেন, জায়গা সম্পত্তি নিয়েও পরিবারের সঙ্গে বিরোধ ছিল মেহজাবিনের। সম্পত্তি লিখে দেয়ার জন্য বাবা-মাকে অনেক চাপ দিত। এ নিয়ে এর আগে বৈঠক শালিস হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, মেহজাবিন তার বাবা-মা ও বোনকে হত্যা করে ৯৯৯-এ কল করে। এ সময় তিনি বলেন, ‘আপনার দ্রুত না আসলে আমার স্বামী ও মেয়েকে খুন করে ফেলব।’
পরে দ্রুত টনাস্থলে গিয়ে পুলিশ নিহত তিনজনের লাশ উদ্ধার করে। অন্য দুজনকে অচেতন অবস্থায় ঢামেকে পাঠায়।
পুলিশের ধারণা, শুক্রবার রাতে নেশাজাতীয় দ্রব্য খাইয়ে তিনজনকে গলায় ফাঁস দিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে।
ওসি জামাল উদ্দিন বলেন, ‘আমরা মরদেহগুলো হাত পা বাঁধা অবস্থায় পেয়েছি। গতকালকে রাতে তাদের হত্যা করা হয়েছে। হত্যা করেছে তাদেরই আরেক মেয়ে। সেই মেয়েকে আটক করা হয়েছে।’
এদিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শফিকুল বলেন, শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে এসেছিলাম। গতকাল রাতে খাবার ও চা খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ি। আমার মেয়েও অচেতন হয়ে যায়।
ওয়ারী জোনের ডিসি ইফতেখারুল ইসলাম বলেন, মেহজাবিন হত্যা করে ঘটনাস্থল থেকে ফোন দেয়। পুলিশ দ্রুত না গেলে তার স্বামী ও সন্তানকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় তাকে আটক করা হয়েছে(জনমত)