র্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আপন ভাতিজিকে হত্যার কারণ উল্লেখ করে বিষয়টি স্বীকার করেন এবং পরিকল্পনা ও খুনের লোমহর্ষক বর্ণনা দেন রবিউল। বিষয়টি গণমাধ্যমে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে র্যাব-৯-এর মিডিয়া শাখা।
র্যাব জানায়, গত ৯ জুন সানজিদার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উদঘাটনে পুলিশের পাশাপাশি ছায়াতদন্ত শুরু করে র্যাব।
পরবর্তীতে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৯ এর একটি দল নবীগঞ্জের মোস্তফাপুর গ্রামে অভিযান পরিচালনা করে বৃহস্পতিবার (১০ জুন) বিকেল সাড়ে ৫ টায় সানজিদার আপন চাচা রবিউল ইসলামকে গ্রেফতার করে। রবিউল জগন্নাথপুরের সৈয়দপুর গোয়ালগাঁও-এর মৃত জিতু মিয়ার ছেলে।
রবিউল র্যাবকে জানায়, তার আরও চার ভাই রয়েছে। ভাইদের মধ্যে রবিউল সবার ছোট। ২য় ভাই লুৎফুর রহমান লন্ডন প্রবাসী। ভাইদের সংসার চালানোর জন্য সব বড় ভাই (সানজিদার পিতা মো. ছয়ফুল ইসলাম)-এর নিকট লন্ডন থেকে টাকা পাঠাতেন প্রবাসী ভাই লুৎফুর। এ টাকা ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে তাদের সংসারে প্রায়ই একে অন্যের সঙ্গে মনোমালিন্য হতো।
তাছাড়া লন্ডন প্রবাসীর কোনো সন্তান না থাকায় তিনি তার বড় ভাইয়ের মেয়ে সানজিদা বেগমকে বেশি আদর করতেন এবং বিদেশ হতে টাকা পাঠানোর সকল লেনদেনের বিষয়ে সানজিদাকে অবগত করতেন। যা রবিউল সহ্য করতে পারতেন না।
জানা গেছে, রবিউলের তিন মাস বয়সি এক মেয়েসন্তান রয়েছে। রবিউল সব সময় মনে করতেন- যদি সানজিদা জীবিত থাকে তবে তার মেয়ে প্রবাসী ভাইয়ের আদর-যত্ন থেকে বঞ্চিত হবে। তাই সে সানজিদাকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে ফেলা প্রয়োজন।
সেই হিংসাত্বক তাড়না থেকে হত্যাকাণ্ডের সাত দিন পূর্বে রবিউল তার স্ত্রী-সন্তান নিয়ে শ্বশুর বাড়ি চলে যান এবং সানজিদাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। ঘটনার আগের দিন স্ত্রী-সন্তান ছাড়া রবিউল একা বাড়ি ফিরে আসেন।
প্রতিদিনের মতো মঙ্গলবার রাতের খাবার শেষে ঘুমিয়ে পড়েন নিজের কক্ষে। ভোররাত ৪টার দিকে রবিউল চুপিসারে সানজিদার কক্ষে যান এবং ঘুমন্ত সানজিদার নাক-মুখ বালিশ দিয়ে চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে রাখেন। এক পর্যায়ে সানজিদা বেগম মারা যান। সানজিদা বেগমের মৃত্যু নিশ্চিত করে রবিউল ইসলাম বাড়ি থেকে পালিয়ে যান।
ঘটনার পর বৃহস্পতিবার সানজিদার ভাই বাদি হয়ে রবিউল ও তার স্ত্রী মোছা. সুহি আক্তারের বিরুদ্ধে জগন্নাথপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।