লতিফুর রহমান রাজু, সুনামগঞ্জ : সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলায় মামলা মোকাদ্দমা ও পূর্ব বিরোধের জের ধরে স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা বাবুল মিয়া(৪৮) নামের এক ইউপি সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যানের দু’পায়ের হাটুর গিলা ও রগ কেটে নিয়েছে প্রতিপক্ষ ফয়সাল বাহিনীর লোকজন । পরে গুরুতর আহত ও রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে স্থানীয় এলাকাবাসী ও তার পরিবারের লোকজন উদ্ধার করে প্রথমে সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে তার অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে সিলেট উসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। বাবুল মিয়া তাহিরপুর উপজেলার বালিজুরী ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও তিন তিন বারের ইউপি সদস্য। এবং দক্ষিণকুল গ্রামের নবাব মিয়ার ছেলে।
এ ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল (৭ জুন সোমাবার) বিকাল সাড়ে ৫ টার সময় আনোয়ারপুর বাজারে। ঘটনার পর থেকেই আনোয়ারপুর বাজারবাসীসহ স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে আতংক বিরাজ করছে।
এ ঘটনায় আজ (৮ জুন মঙ্গলবার) দুপুরে ফাজিলপুর গ্রামের হাজী মর্তুজ আলী আরোপে রাজা হাসের ছেলে ও ফয়ছলের ভাই আলমগীর(৪৭), কাসেম(৪০), রহমগীর(২৯), সেলিমগীর মিয়া(২৭), হোসেঙ্গীর মিয়া(৪৩) ও ফয়ছল মিয়া(৩৭) সহ ১১ জনের নাম উল্লেখ এবং ৫/৭ জনকে অজ্ঞাত রেখে দক্ষিণকুল গ্রামের নিজম উদ্দিনের ছেলে আহত বাবুলের ভাগ্নে(বোনের ছেলে) মানিক মিয়া(২৮) বাদী হয়ে তাহিরপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানাযায়, গতকাল সোমবার বিকালে বাবুল মিয়া( ওরফে বাবুল মেম্বার) স্থানীয় আনোয়ারপুর বাজারের সবজি বাজার থেকে সবজি কিনে বাড়ি ফেরার পথে তালুকদার ফার্মেসীর সামনে আসা মাত্রই পূর্ব পরিকল্পিতভাবে রাম দা, ভারতীয় ভুজাং সহ দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রসহ নিয়ে ফয়ছলের ভাই আলমগীর, কাসেম, রহমগীর, সেলিম, হোসাঙ্গীর সহ ১০/১৫ জনের ফয়ছল বাহিনীর একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ বাবুল মিয়ার উপর অর্তকিত হামলা চালায়। এ সময় বাবুল মিয়া কোনকিছু বোঝার আগেই রামদা ও ভুজাং দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে রক্তাক্ত গুরুতর আহত করে। পরে বাবুলের দু’পায়ের হাটুর গিলা ও পায়ের পিছনের রগ কেটে ফেলে রেখে সিএনজি যোগে পালিয়া যায়। এ খবর পেয়ে তার পরিবারের লোকজন ও স্থানীয় এলাকাবাসী গুরুতর আহত অবস্থায় বাবুলকে উদ্ধার করে প্রথমে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে তার অবস্থা আশংকা জনক হওয়ায় পরে তাকে সিলেট উসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে।
এব্যাপারে তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) আব্দুল লতিফ তরফদার লিখিত অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আনোয়ারপুরের ঘটনার খবর পেয়েই সাথে সাথে ঘটনার স্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এখন পরিস্থিতি শান্ত আছে। তবে লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতেই আমার মামলা নেব। এবং এ ঘটনায় যারা জড়িত তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
উল্লেখ্য : বিগত ১৬ মে বাবুল মিয়া আত্নীয় আনোয়ারপুর বাজারে ব্যবসায়ী ইসমাইল ও তার ভাই মনবুলকে মারধর করে গুরুতর আহত করার পর তাদের কয়েকটি দোকান ঘর ভাংচুর করে। পরে এ ঘটনায় বাবুল মিয়া বাদী হয়ে তাহিরপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করে। মামলা নং-০৯। জি. আর মামলা নং-৫৯/২০২১ ইং (তাহিরপুর) দঃ বিঃ ১৪৩/৪৪৮/৩২৪/৩২৫/৩২৬/৩০৭/৩৮০/৪২৭/৫০৬/১১৪/৩৪ ধারায় যা বর্তমানে সুনামগঞ্জ বিজ্ঞ আদালতে চলমান রয়েছে