তমাল পোদ্দার, ছাতকঃছাতকের কৈতক হাসপাতালে ডা. মোজাহারুল ইসলামের চলছে একক আধিপত্য। হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসা সেবাদানের চেয়ে ব্যক্তি স্বার্থের রাজনীতি নিয়ে তিনি ব্যস্ত থাকেন বেশীরভাগ সময়। এমনটিই এখন শোনা যাচ্ছে এলাকাবাসীর লোকমুখে। দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ থেকে শুরু করে পরিচ্ছন্নতা কর্মী পর্যন্ত কেউই বাদ পড়ছেন না তার রোষানল থেকে। উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ এ হাসপাতালে অনেক দূর দূরান্ত থেকে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য লোকজন আসেন।
ছবি: ডা. মোজাহারুল ইসলাম
এর মধ্যে মহিলা রোগীর সংখ্যা তুলনামূলক বেশি। আবার রয়েছে মাতৃজনিত চিকিৎসা। দিন দিন হাসপাতালে রোগীর চাপ বাড়ছে। অভিযোগ উঠেছে, ডা. মোজাহারুল ইসলাম কৈতক ২০ শয্যা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার হওয়া সত্ত্বেও তিনি হাসপাতালের আবাসিক কোয়ার্টারে বসবাস করেন না। তিনি সিলেট থেকে হাসপাতালে যাতায়াত করেন। কিন্তু হাসপাতালে তার বরাদ্দকৃত বাসায় প্রতিদিনই ডিউটি চলাকালীন সময়ে তিনি প্রাইভেট রোগী দেখেন। সম্প্রতি, হাসপাতালের স্বাস্থ্য সহকারী, সিনিয়র স্টাফ নার্স, এমএলএসএস, ওয়ার্ড বয় ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী কেউই বাদ পড়েননি তার রোষানল থেকে। ওই কারনে তারা ডা. মোজাহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে মানববন্ধনও করে। মানববন্ধন চলাকালে তারা অভিযোগ করেন, ডা. মোজাহারুল ইসলাম চাকুরিবিধি ভঙ্গ করে হাসপাতালে ক্ষমতার অপব্যাবহার করে চলছেন। তিনি দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির পাশাপাশি হাসপাতালের কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের সঙ্গে নিয়মিত খারাপ আচরণ করে থাকেন। বিভিন্ন সময়ে তার এসব স্বেচ্ছাচারিতার বিষয় সুনামগঞ্জ জেলার সিভিল সার্জনসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। মানববন্ধনের পর থেকে ডা. মোজাহারুল ইসলাম তাদের উপর আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন বলে জানা গেছে। অভিযোগ রয়েছে, ডা. মোজাহারুল ইসলাম হাসপাতালে যোগদান করার পর থেকেই হাসপাতাল থেকে রোগীরা ছাড়পত্র নিয়ে যাওয়ার সময় পূর্বে থেকেই নার্সদের হাতে ধরিয়ে দেওয়া নিম্ন মানের ওষুধ কোম্পানি থেকে মোটা অংকের উৎকোচ নিয়ে তিনি নিম্ন মানের ওষুধ লিখে দিতেন। বিশ্ব মহামারী করোনাকালীন সময়ে ২০২০ সালে প্রায় সময়ই তিনি কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকে সপ্তাহে একসাথে হাজিরা দিয়ে কর্মকাল জায়েজ করতেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক লোকজন জানান, ডা. মোজাহারুল ইসলাম অন্যায় কারীকে প্রশ্রয় দিচ্ছেন না এটা তার মুখের কথা। এই কথা সবাইকে শুনিয়ে তিনি ব্যক্তি স্বার্থ হাসিল করছেন। এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত মেডিকেল অফিসার ডা. মোজাহারুল ইসলামের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। ওই কারনে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।