• ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

ছাতকে লাভলী বাহিনীর হামলায় ব্যবসায়ী হাজী এনাম নিহত,এলাকায় শোকের ছায়া,নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড়

bilatbanglanews.com
প্রকাশিত মে ২০, ২০২১
ছাতকে লাভলী বাহিনীর হামলায় ব্যবসায়ী হাজী এনাম নিহত,এলাকায় শোকের ছায়া,নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড়

 

নিজস্ব প্রতিবেদক: ছাতকে খুনি লাভলী বাহিনীর হামলায় গুরুতর আহত  হাজী মোস্তফা আনোয়ার এনাম (৪০)আজ মারা গেছেন। এক সপ্তাহ মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে বৃহস্পতিবার পুর ১টায় সিলেট ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।বিশিষ্ট ব্যবসায়ী হাজী  মোস্তফা আনোয়ার এনাম পৌরসভার নোয়ারাই মহল্লার মৃত মতিন মিয়ার পুত্র।

ঈদের আগেরদিন ১৩ মে বৃহস্পতিবার ইফতারের পূর্বমূহুর্তে প্রতিপক্ষের হামলায় গুরুতর আহত হাজী মোস্তফা আনোয়ার এনাম (৪০) কে সিলেট নগরীর পার্কভিউ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দীর্ঘ এক সপ্তাহ মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে আজ তিনি ইন্তেকাল করেন। হাজী এনাম পরিবার নিয়ে সিলেট শহরে বসবাস করতেন।মা ও ভাইদের সাথে ঈদ করার জন্য বাড়িতে আসেন। ঈদের আগেরদিন বৃহস্পতিবার ইফতারের পূর্বমূহুর্তে বাজার করে বাড়ির পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় প্রতিবেশী লাভলী বেগম হাজী এনামের উপর নোংরা পানি ফেলেন। এঘটনার প্রতিবাদ করায় লাভলী বেগম ও তার স্বামী দবির মিয়া একদল অস্রধারী তার উপর হামলা চালায়। দা ও রামদা দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মারাত্মক ভাবে আহত করেন। হামলাকারী নিহত হাজী এনামের  চাচাতো ভাই দবির মিয়া মৃত নূর মিয়ার পুত্র।

হামলার পরপরই স্থানীয়রা আহত হাজী মোস্তফা আনোয়ার এনামকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। এখান থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার করা হলে দ্রুত সময়ের মধ্যে কোনো এয়ার অ্যাম্বুলেন্স না পাওয়ায় সিলেট নগরীর পার্কভিউ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। ভর্তির পর থেকেই তিনি হাসপাতালের আইসিইউ-তে ছিলেন। দীর্ঘ  ৫ দিনের মধ্যে তার জ্ঞান না  ফিরায়  আবারো ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় । ডাক্তাররা জানিয়েছিলেন  হাজী মোস্তফা আনোয়ার এনামের অবস্থা আশংকাজনক। যে কোন সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। নিহত হাজী মোস্তফা আনোয়ার এনামের ভাই মোস্তফা দেলোয়ার পারভেজ  জানান,তার ব্যবসায়ী ভাই হাজী মোস্তফা আনোয়ার এনাম সিলেটে থাকেন। পরিবারের সকলের সাথে ঈদ উদযাপনের জন্য তিনি বাড়িতে এসেছিলেন। ঈদের আগের দিন ইফতারের পূর্বে ইফতারি ও বাজার নিয়ে ঘরে ফিরছিলেন। ঘরের পাশে আসলে চাচাতো ভাই দবির মিয়ার স্ত্রী লাভলী বেগম তার উপর নোংরা পানি ফেলে দেয়। এ নিয়ে দবির ও দবিরের স্ত্রীর সাথে কথা কাটাকাটি হয় এনামের। এসময় দবির মিয়া ও তার স্ত্রী লাভলী বেগম সহ তাদের সহযোগীরা দা ও রামদা দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে হাজী মোস্তফা আনোয়ার এনামকে। চিৎকার শুনে তিনি ও তার আরেক ভাই মোস্তফা জুবায়ের পাশের ঘর থেকে দৌড়ে আসেন। আশপাশের লোকজনও ঘটনাস্থলে এগিয়ে আসেন। এসময় হামলাকারীরা দ্রুত স্থান ত্যাগ করে চলে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় হাজী মোস্তফা আনোয়ার এনামকে উদ্ধার করে সিলেটের পার্কভিউ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভর্তির পর থেকে তিনি আইসিইউ-তে অজ্ঞান অবস্থায় চিকিৎসাধীন ছিলেন। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে খুনি লাভলী বেগমের প্ররোচনায় পুলিশ উলটো মোস্তফা দেলোয়ার পারভেজকে আটক করে ঈদের দিন জেলহাজতে পাঠিয়ে দেয়।গত সোমবার সে জেলহাজত থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছে। এদিকে হামলার ঘটনায় আহত মোস্তফা আনোয়ার এনামের অপর ভাই মোস্তফা জুবায়ের বাদী হয়ে ছাতক থানায় ১০ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় মৃত নূর মিয়ার পুত্র রকিব মিয়া ও কবির মিয়াকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

বর্তমানে এ মামলার অন্যান্য আসামী শিহাব মিয়া, মিশু, শরীফ, জমির মোল্লা, শিউলী পলাতক রয়েছে বলে স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে।

হাজী এনামের মৃত্যুতে ছাতকে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় বইছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। সবাই খুনি লাভলী বাহিনীকে তাড়াতাড়ি গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তি দাবি জানিয়েছেন প্রশাসনের কাছে।