• ১০ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৬শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ১৫ই মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

পবিত্র রামাদ্বানে সুস্থ থাকার ৩টি উপায়

bilatbanglanews.com
প্রকাশিত এপ্রিল ১৪, ২০২১
পবিত্র রামাদ্বানে সুস্থ থাকার ৩টি উপায়

বিবিএন নিউজ ডেস্ক: রমজান মানেই সংযমের মাস। কিন্তু কেউ কেউ রমজানে খাবার-দাবারে এমন অসংযমী হন যে তাতে রমজানের গুরুত্ব আর থাকে না। মনে হয় বেশিরভাগই পরে সুদে-আসলে তিনগুন খাবার জন্যই রোজা রেখেছেন সারাদিন। যারা সারাদিন না খেয়ে থাকার পর, ইফতার থেকে সাহরির সময় পর্যন্ত ভাজা পোড়া এটা-সেটা খেতে থাকলে দ্রুত অসুস্থ হয়ে পড়বার আশংকা থাকে। সেজন্য রমজানে খেতে হবে কম।

আল্লাহর রাসুল (সা:) কোন সময় ইফতার করতেন মাত্র দু/একটা খেজুর দিয়ে বা ছাতু দিয়ে। তাঁর উম্মত হয়ে তাঁকে ভালবাসার দাবি করে উল্টোপথে হাঁটলে কি আর সেই দাবি ঠিক হলো? এবারে রমজানে সুস্থ থাকার ৩টি মূলমন্ত্র নিয়ে আমরা আলোচনা করছি:

পানি : সারাদিন রোজা রাখার কারণে পানি পান থেকে বিরত থাকতে হয়। এজন্য ইফতার থেকে সাহরির আগ পর্যন্ত ঘন ঘন পানি পান করুন। তবে কখনোই একসঙ্গে অনেক পানি পান করবেন না। এ সময়ের মধ্যে ৭-৮ গ্লাস পানি পান করার চেষ্টা করুন।একজন প্রাপ্তবয়স্কের প্রতিদিন গড়ে ২-৩ লিটার পানির প্রয়োজন হয়। শরীরে পানির পরিমাণ ওঠানামা করে। প্রস্রাব এবং ঘামের মাধ্যমে শরীরের পানি ফুরিয়ে যায়। রোজা থাকার কারণে যেহেতু পানি পান করা হয় না, এ কারণে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দেয়। ডিহাইড্রেশনের ফলে ওজন কমে যেতে পারে।

পাশাপাশি তাজা ফলের রস বা দুধ পান করতে পারেন। সেইসঙ্গে খাবারে ঝোলজাতীয় তরকারি, স্যুপ বা স্টু রাখতে হবে নিয়মিত। তরমুজ বা মাল্টার মতো রসালো ফল-মূল খেতে হবে। বেশি করে শাক-সবজি খেতে হবে, যেমন- শসা, লাউ, পালং শাক, পেঁপে ইত্যাদি।

রমজানে কফি, চা এবং কোমলপানীয় পান করলে প্রস্রাব বেড়ে যায়। এর ফলে শরীর দ্রুত পানিশূন্য হতে থাকে। যা বিপদের কারণ। এ কারণে রোজা রেখে ইফতার বা সাহরিতে চা, কফি বা কোমলপানীয় পান করবেন না।

অস্বাস্থ্যকর খাবার পরিহার: রোজায় সারাদিন না খেয়ে থাকার ফলে মিষ্টি এবং ফ্যাটজাতীয় খাবারের প্রতি আমাদের আসক্তি বাড়ে। তাই ইফতারে অস্বাস্থ্যকর সব ভাজা-পোড়া বা ভারি খাবার খেয়ে থাকেন অনেকেই। এসব খাবার আমাদের বেশি পিপাসার্ত করে দেয়।

চিপস, বিস্কুট বা ভাজা-পোড়ার বদলে বাদাম খাওয়ার চেষ্টা করুন। ছোলা খেলেও তেল-মশলা ছাড়া খেতে হবে। না হলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বেড়ে যাবে। সাদা রুটি, পাস্তা বা চিনিযুক্ত সিরিয়ালের পরিবর্তে কার্বোহাইড্রেটসমৃদ্ধ বাদামি চাল বা রুটি খেতে হবে।

ভাজা-পোড়া খাবারের পরিবর্তে গ্রিলড, বেকড বা স্টিমযুক্ত খাবার বেছে নিন। ইফতারের সময় একসঙ্গে বেশি খাবার খাবেন না। প্রয়োজনে অল্প করে কয়েকবার খান। মিষ্টিজাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন।

ইফতার বা সাহরিতে যদি আপনি পুষ্টিকর খাবার না খেয়ে অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে পেট ভরিয়ে রাখেন; তাহলে রমজানেও আপনার ওজন বেড়ে যাবে। আর যদি ওজন কমাতে চান; তাহলে রমজানে সামান্য সচেতন থেকে পুষ্টিকর খাবার খেয়ে আপনার লক্ষ্য অর্জন করতে পারবেন।

বিশ্রাম এবং শরীরচর্চা: একদিন রোজা রাখার পর আবার পরের দিনের জন্য আপনার শরীর প্রস্তুত করতে প্রয়োজন পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও অনুশীলন করা। এজন্য শরীরকে পুষ্টি দিতে হবে। যার মাধ্যমে শরীর আপনাকে শক্তি দেবে। তাই ভারসাম্যযুক্ত খাবারের বিকল্প নেই।

ফল, শাক-সবজি, মাংস, মাছ এবং হাঁস-মুরগির ডিম, দুধ, দই বা পনির এবং স্বাস্থ্যকর চর্বিজাতীয় খাবার বেশি করে খেতে হবে। খাবার খাওয়ার সময় ধীরে ধীরে সময় নিয়ে খাবেন। তাহলে খাবার দ্রুত হজম হবে।

রোজায় ফাইবারযুক্ত খাবারের বিকল্প নেই। এ সময় যদি কম শর্করা এবং ভালো ফ্যাটজাতীয় খাবার খান; তাহলে শরীর অনেক শক্তি পাবে। শরীর কখনো ক্লান্ত হবে না। শরীরকে সচল রাখতে রমজানে নিয়মিত হাঁটাহাঁটি করুন।

প্রতিদিন অন্তত ২০-৩০ মিনিট হাঁটুন বা ব্যায়াম করুন। পাশাপাশি বিশ্রামও নিতে হবে, তাই বলে সারাদিন শুয়ে-বসে থাকবেন না। রমজানের সময় প্রতিদিন দুপুরের পর একটু ঘুমিয়ে নিন। সূত্র: ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিক, আবু ধাবি।