• ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

ঢাবি ছাত্রলীগ নেতা লাঞ্চিতের ঘটনায় এমপি রতনের চাচা আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার

bilatbanglanews.com
প্রকাশিত এপ্রিল ৭, ২০২১
ঢাবি ছাত্রলীগ নেতা লাঞ্চিতের ঘটনায় এমপি রতনের চাচা আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার

নিজস্ব প্রতিবেদক:সুনামগঞ্জ-১ (তাহিরপুর, জামালগঞ্জ,ধর্মপাশা ও মধ্যনগর) আসনের সরকার দলীয় সাংসদ মোয়াজ্জেম হোসেন রতন এমপির চাচাকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিস্কার করা হয়েছে।
হেফাজত ইসলামকে নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেয়ায় ধর্ম অবমাননার মিথ্যা অভিযোগ এনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্রলীগের এক নেতাকে পুলিশের সামনে লাঞ্চিত ও হাতকড়া পড়িয়ে জোর পুর্বক জনসম্মুখে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করার ঘটনায় ধর্মপাশা উপজেলার জয়শ্রী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আবুল হাসেম আলমকে বহিস্কার করা হয়। হাসেম স্থানীয় এমপি রতনের চাচা।


বুধবার সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সাবেক এমপি আলহাজ¦ মতিউর রহমান সাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বহিস্কারের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন।
একই সাথে ঢাবি জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ হতে ঢাবি ছাত্রলীগ নেতা লাঞ্চিতের ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় আবুল হাসেম আলমের ছেলে হেফাজত ইসলামের নেতা কতৃক সংঘবদ্ধ হয়ে অন্যায় ভাবে ঢাবি ছাত্রলীগ নেতাকে হামলা লাঞ্চিত করা এবং দলীয় কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখা হয় এবং ঘটনাস্থলে আওয়ামী লীগ ইউনিয়ন শাখার সাধারন সম্পাদক আবুল হাসেম আলম নিজে উপস্থিত থেকেও কোন প্রতিকার করতে পারেননি ফলে ধর্মপাশা উপজেলা আওয়ামী লীগ এর লিখিত প্রস্তাবের ভিক্তিত্বে আবুল হাসেম আলমকে বহিস্কার করা হয় ।


প্রসঙ্গত মঙ্গলবার বিকেলে সুনামগঞ্জের ধর্মপাশার জয়শ্রী বাজারে লাঞ্চিতের শিকার হন ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের উপ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আফজাল খান (২৪)।
আফজালের বাড়ি উপজেলার জয়শ্রী ইউনিয়নের মহেশপুর গ্রামে। সে ঢাবিতে সমাজকল্যাণ বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ঢাবি ছাত্রলীগ নেতা আফজাল গত ২৯ মার্চ দুপুরে ফেসবুকে হেফাজতে ইসলামের সহিংসতার ছবি দিয়ে একটি পোস্ট দেন। কয়েক ঘণ্টা পর পোস্টটি ’অনলি মি’ করে রাখনে। স্থানীয় কিছু যুবক ফেসবুক পোস্টের স্ক্রিনশট নিয়ে রাখেন।
এরপর মঙ্গলবার বিকেল ৫টায় আফজাল নিজ গ্রাম মহেশপুর থেকে জয়শ্রী বাজারে গেলে জয়শ্রী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আবুল হাশেম আলমের ছেলে আল মুজাহিদ (২৫) কিছু মানুষকে নিয়ে আফজালের কাছে ফেসবুক পোস্টের বিষয়ে ব্যাখ্যা চান। তখন শিক্ষার্থী আফজাল সবাইকে বলেন, হেফাজতে ইসলামকে ব্যঙ্গ করে কোনো পোস্ট দেননি। তবে হেফাজতের আন্দোলনের নামে ধ্বংসাত্মক কাজের প্রতিবাদে একটি পোস্ট দিয়েছেন।
এনিয়ে শিক্ষার্থী আফজাল ও মুজাহিদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে মুজাহিদ আফজালের উপর চড়াও হয়। পরে মুজাহিদের পক্ষের লোকজন শিক্ষার্থী আফজালকে বাজারে থাকা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে আটকে রাখেন।
ধর্মপাশা থানার এসআই জহিরুল ইসলাম ও এএসআই আনোয়ার হোসেন ঘটনাস্থলে যান। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার পর সেখানে উপস্থিত হন ধর্মপাশা থানার (ওসি) মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন।
অভিযোগের বিষয়ে জয়শ্রী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আবুল হাশেম আলম ও তার ছেলে আল মুজাহিদ বলেন, হেফাজতকে নিয়ে ব্যঙ্গ করে ফেসবুকে স্ট্যাটাসের ব্যাখ্যা জানতে চেয়েছি। ছাত্রলীগ নেতা তখন ইসলাম নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন। ধর্ম নিয়ে মন্তব্য করায় পুলিশকে ঘটনাটি জানিয়ে স্থানীয় লোকজন তাকে দলীয় কার্যালয়ে আটকে রেখেছিল। তাকে মারধর বা লাঞ্ছিত করা হয়নি।
এদিকে ছাত্রলীগ নেতা আফজালের দাবি, ধর্মপাশা থানার ওসির নির্দেশে তাকে হাতকড়া পরানো হয়েছিল এবং উপস্থিত লোকজনের কাছে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করা হয়েছে। পরে তাকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। তার পরিচয় পেয়ে মাঝপথেই পুলিশ হাতকড়া খুলে দেয়। থানায় বসে তিনি রাতে পুলিশ সুপারের সাথে মোবাইলে কথা বলেন। ঘটনার বিবরণ সাদা কাগজে লিখে তাতে সই রেখে তাকে থানা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় ধর্মপাশা থানার ওসি মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেনকে বুধবার রাতে ও মঙ্গলবার রাতে এসআই জহিরুল ইসলাম ও এএসআই আনোয়ার হোসেনকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে সুনামগঞ্জ পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।,