বিবিএন নিউজ ডেস্ক: নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে রিসোর্ট থেকে হেফাজত নেতা মামুনুল হককে নারীসহ আটকের পর সুনামগঞ্জের ছাতকে হেফাজত কর্মীদের ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা হয়েছে।ছাতক থানায় হামলার অভিযোগে রোববার দুপুরে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আনোয়ার মিয়া এই মামলা করেছেন। আসামি করা হয়েছে ৫০০ ব্যক্তিকে।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ নাজিম উদ্দিন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তবে তিনি আসামিদের নাম জানাননি। সোনারগাঁয়ের রয়েল রিসোর্টের একটি কক্ষে শনিবার (৩ এপ্রিল) বিকেলে এক নারীর সঙ্গে অবস্থান নেয়া হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করে স্থানীয় লোকজন।
স্থানীয় লোকজনের প্রশ্নের মুখে হেফাজত নেতা তার সঙ্গীনিকে নিজের দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে দাবি করেন। এ ঘটনায় ওই রিসোর্ট ও পার্শ্ববর্তী ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অবরোধ করে ভাঙচুরের পাশাপাশি হেফাজত কর্মীরা তাণ্ডব চালান মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া ও সুনামগঞ্জের ছাতকে।
ছাতক পৌর শহরে রাতে মিছিল বের করে বেশ কিছু দোকানপাট ভাঙচুর করা হয়। এ সময় পুলিশ বাধা দিলে ছাতক থানায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। এতে ৬ পুলিশসহ অন্তত ২০ জন আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে।
এ ঘটনায় রাতেই ৯ জনকে আটক করে ছাতক থানার পুলিশ। তাদের রোববারের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। গত মাসে মামুনুল নিয়ে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেয়ার জেরে এই জেলার শাল্লা উপজেলায় হেফাজত সমর্থকদের তাণ্ডব নতুন করে আলোচনায় আসে।
মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ফেসবুকে স্ট্যাটাসের জেরে গত ১৭ মার্চ সকালে শাল্লার নোয়াগাঁওয়ে হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলা চালায় কয়েক হাজার লোক। শাল্লার পাশের দিরাইয়ে ১৫ মার্চ সমাবেশ করে হেফাজত। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করা হেফাজত নেতা মামুনুল হক ওই সমাবেশে বক্তব্য দেন। পরদিন মামুনুলের বিরুদ্ধে দেয়া নোয়াগাঁও গ্রামের ঝুমনের স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট ছড়িয়ে পড়ে।
উত্তেজনা আঁচ করতে পেরে নোয়াগাঁও গ্রামবাসীর মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। তারা ফেসবুকে পোস্ট দেয়া যুবক ঝুমনকে মঙ্গলবার রাতেই পুলিশের হাতে তুলে দেন। তা সত্ত্বেও ১৭ মার্চ সকালে এলাকায় বিক্ষোভের ঘোষণা দেয় হেফাজত। কয়েক হাজার মানুষ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ভাঙচুর করে নোয়াগাঁওয়ের ৮৭টি হিন্দুবাড়ি।
এ ঘটনায় ১৮ মার্চ রাতে করা হয় দুটি মামলা। হবিবপুর ইউপির চেয়ারম্যান বিবেকানন্দ মজুমদার বকুল প্রথম মামলাটি করেন। এতে প্রধান আসামি করা হয় দিরাইয়ের তাড়ল ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য স্বাধীন মিয়াকে। এ মামলায় ৮০ জনের নাম ও অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
আরেকটি মামলা করা হয় শাল্লা থানা-পুলিশের পক্ষ থেকে। তাতে আসামি করা হয় অজ্ঞাতপরিচয় দেড় হাজার ব্যক্তিকে। মামলা দুটিতে এখন পর্যন্ত ৩৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।