• ১২ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ২৭শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১০ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সুনামগঞ্জে চাল আটার জন্য ভোর থেকে লম্বা লাইন, বরাদ্দ ও ডিলার বৃৃৃদ্ধির দাবী

bilatbanglanews.com
প্রকাশিত ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২১
সুনামগঞ্জে চাল আটার জন্য ভোর থেকে লম্বা লাইন, বরাদ্দ ও ডিলার বৃৃৃদ্ধির দাবী

লতিফুর রহমান রাজু ,সুনামগঞ্জ:বোরো ফসল ঘরে তুলতে আরো   প্রায় দুই মাস বাকী  কিন্ত ধান চাল ও আটার দাম আকাশ ছোঁয়া। সাধারণ মানুষ  বাজারের চাল  কিনতে পারেন না বাধ্য হয়়ে ওএমএস এর দোকান গুুুলোতে ভিড় করেন। ভোরের আলো  ফুটার সাথেই  তারা   লাইন দেন । দীীর্ঘ সময় দাড়িয়়ে চাল ও আটা নিিয়ে যান সাধারণ  নারী পুরুষ।

 বাজারের এক কেজি মোটা চাউলের দাম ৪৫ টাকা এতো টাকা দিয়া চাউল কিনমু ক্যামনে। ইতার লায় সরকারি চাউলের লাগি তিন মাইল পথ পারি দিয়া টাউনে আই। এভাবে সুনামগঞ্জ পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের জলিলপুর গ্রামের আকুল বিবি (৫৮) তার খাদ্য সংকটের কথা বলছিলেন। তিনি জলিলপুর থেকে নুতনপাড়ায় ওএমএসসের চাল নিতে এসেছেন। সদর উপজেলার  লক্ষণশ্রী ইউনিয়নের বাহাদুরপুর গ্রামের আয়মনা বিবি (৬২) বলেন, কোন সময় চাউলের এতো দাম ছিলো না। এবার চাউল ৩০ টাকার চাউল ৪৫ টেকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে। এবার রোজি-রোজগার কম কিন্তু চাউলের দাম বেশি। চাউল কিনলে বাজারের পয়সা থাকে না। শহরের মল্লিকপুর এলাকার সুফিয়া আক্তার বলেন, তাঁর জামাই রিক্সা চালায়। সারা দিনে তিশো থেকে চারশো টাকা রোজগার করে রিস্কা ভাড়া টাকা জমা দেয়ার পর হাতে দুই আড়াইশো টাকা থাকে। এ টাকা দিয়ে বাজার থেকে চাল কিনলে অন্যবাজারের কোন কিছু করা যাইতো না। তাই ভোর থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে চাল কিনি। অনেক দিন কিনতে পারি আবার অনেকদিন পারি না। তখন খালি হাতে বাড়ি ফিরে যেতে হয়। বাহাদুরপুর গ্রামের রাজিয়া বেগম বলেন, বাজারের ধানের দামও আগুন চাউলের দামও আগুন। গরীব মানুষ কেমনে বাঁচবো। ধানের দাম ১৪০০ টাকা মণ চালের কেজি ৪৫ টাকা। এইটা তো দেখি গরীব মারার বছর আইছে। নুতনপাড়া আবাসিক এলাকার কমলা রানী দাস বলেন, ওএমএস এর চাউলের কেজি ত্রিশ টাকা আটার কেজি আঠারো টাকা। ভাগ্য ভালো থাকলে চাউল কেনা যায় নইলে আটা নিয়ে বাড়ি যেতে হয়। বাসন্তী দাস বলেন, সরকার প্রতিদিন  যে চাউল দেয় তা কেউ পায় আর কেউ পায় না। ডিলারের দোকানের চাল কেনার জন্য কাড়াকাড়ি শুরু হয়ে যায়। গরীব মানুষের সংখ্যা বেশি তাই চাউল আটার বরাদ্দ বাড়ানো প্রয়োজন। এভাবে চলতে পারেনা। প্রত্যেক ব্যক্তি এক সঙ্গে ৫ কেজি চাল বা আটা কিনতে পারেন। ৫ কেজি চালের দাম ১৫০ টাকা টাকা আটার দাম ৯০ টাকা।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের অফিস সুত্রে জানাযায় গেল ৪ জানুয়ারি থেকে সুনামগঞ্জ জেলা শহরের ৫ জন ডিলারের মাধ্যমে প্রতিদিন এক হাজার মানুষের জন্য সরকারি ভাবে ওএমএস এর চাল আটা বিক্রী করা হচ্ছে। পৌর এলাকার নুতনপাড়া, হাছননগর, তেঘরিয়াসহ ৫টি পয়েন্টে ডিলার গণ চাল বিক্রী করছেন। প্রত্যেক ডিলার প্রতিদিন  একটন করে চাউল আটা বিক্রি করতে পারেন। জেলা শহর ছাড়া অন্য কোন উপজেলায় ওএমএস এর চাল বিক্রি হচ্ছে না। স্থানীয় চাল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেন জানাযায়, স্থানীয় ভাবে চাউল কিনতে পারছেন না তারা। দিনাজপুর থেকে মোটা বালাম চাল এনে বিক্রি করছেন। স্থানীয় ভাবে উৎপাদিত চালের দাম অনেক বেশি অন্যদিকে আড়ত গুলোতে সে পরিমাণ চাল মজুদ নেই। তাই চালের দাম আগের চেয়ে অনেক বেড়ে গেছে। আমদানী করা চাল এখনো সুনামগঞ্জের বাজার গুলোতে আসেনি। এভাবে চলতে থাকলে চাউলের দাম আরও বাড়বে। নুতনপাড়া এলাকার ওএসএস ডিলার রতন লাল ধর বলেন, গেল ১৫ দিনে চাউলের চাহিদা দ্বিগুন হয়েছে। প্রতিদিন ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত চাল নিতে আসেন অসংখ্য গরীব অসহায় মানুষ। সবাইকে চাল বা আটা দেয়া যায় না। ১ টন চাল বা ১ টন আটা নিমিষেই শেষ হয়ে যায়। তাই বরাদ্দ বাড়ানো প্রয়োজন। করোনা কালে অনেক স্বচ্ছল পরিবার, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, দিনমজুর, শ্রমজীবী, নিম্ন আয়ের লোকজন চাল কিনতে আসেন। সবাই কে চাহিদা মতো চাল দিতে গেলে প্রতিদিন ২ টন চাল লাগবে। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ নকিব সাদ সাইফুল ইসলাম বলেন, চালের বরাদ্দ স্থানীয় ভাবে বাড়ানোর কোন সুযোগ নেই। আমরা বরাদ্দ বাড়ানোর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বলেছি। বরাদ্দ বাড়ানো হলে ডিলারদের চালের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়া হবে।