বিবিএন নিউজ ডেস্ক : করোনায় কুইনের কিংডম গ্রেট বৃটেনের অবস্থা এখন একেবারে করুণ।অবস্থা এতটাই করুণ যে, সমগ্র বৃটেনের সকল হাসপাতালকে সব সময় প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে। লন্ডনের রয়েল লন্ডন, নিউহাম এসব হাসপাতালের বাইরে এম্বুলেন্সের ভিতরে করোনা আক্রাস্ত রোগীদের চিকিৎসা দিতে দেখা যাচ্ছে। এনএইচ থেকে বাসিন্দাদের টেক্স মেসেজে পাঠিয়ে বলা হচ্ছে, অতি জরুরী না হলে কেউ হাসপাতালের সাথে যোগাযোগ না করতে।
লন্ডনের শীর্ষ একজন চিকিৎসক অধ্যাপক হিউ মন্টোগোমারি এ পরিস্থিতির জন্য যারা লকডাউনে বিধিনিষেধ ভেঙ্গেছে, মাস্ক পড়েনি তাদেরই দায়ী করেছেন। তিনি বলেছেন, “যারা লকডাউন, বিধি-নিষেধ ভাঙছেন, মাস্ক ব্যবহার করছেন না, তাদের হাতে রক্ত রয়েছে।অনেকে গাফলতি করেছে। মাস্ক ব্যবহার করেনি, দূরত্ব বজায় রাখেনি। করোনার নতুন ভা্যইরাসের বৈশিষ্ট্য তা প্রচণ্ড দ্রুত ছড়াচ্ছে।এরজন্য বৃটেনের সকল বয়সীদের এসব মেনে বাইরে বেরুনো উচিত। আর না হয় ঘরে থাকা উচিত।
লন্ডনে কর্মরত অপর আরেকজন ডাক্তার বলেন, ব্রিটেনে চিকিৎসা দেয়া একটি টিম ওয়ার্কের বিষয় অর্থাৎ ডাক্তার, নার্স, হেলথওয়ার্কার, অক্সিজেন ও চিকিৎসা যাকে যতুটুকু দরকার সেটি দিতে হয় ও এসব সাপোর্ট পর্যাপ্ত থাকতে হয়। “কিন্তু আমরা হিমশিম খাচ্ছি যে কাকে রেখে কাকে রিসিভ করবো, কোনটাকে প্রায়োরিটি দিবো, কোথায় রাখবো, কি লজিস্টিক, কে অক্সিজেন ম্যানেজ করবে, কে ঔষধ দিবে -সব কিছু নিয়ে হিমশিম অবস্থা”।

বৃটেনে এখন সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ রয়েছে রাজধানী লন্ডন এবং দক্ষিণ পূর্ব ইংল্যান্ডে। লন্ডনে সাপ্তাহিক সংক্রমণের হার প্রতি লাখে ৮৫৮ জন, যেটা দেশের অন্যান্য জায়গা থেকে দ্বিগুণ।লন্ডন এবং দক্ষিণ পূর্ব এলাকার হাসপাতালগুলোতে ব্যাপক চাপ যাচ্ছে। চিকিৎসকরা ধারণা করছেন আমাদের এখনও অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে। এজন্য তিনি সবাইকে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান। বৃটেনে সর্বশেষ খবরে প্রকাশ, এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন মোট ২৫,৪২,০৬৫ জন এবং মারা গেছেন মোট ৭৪,১২৫ জন।
বৃটেনে গত চারদিন ধরে প্রতিদিন কমপক্ষে ৫০ হাজার করে মানুষ করোনা রোগে নতুন করে আক্রান্ত হচ্ছেন। নতুন ধরনের করোনা ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়ার গতি অনেক বেশি। এর ফলে এমন সংক্রমণ দেখা যাচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। শুক্রবার সেখানে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৫৩ হাজার ২৮৫ জন। মারা গেছেন ৬১৩ জন।

বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এরই মধ্যে এস্ট্রাজেনেকার কাছ থেকে ১০ কোটি টিকার ডোজ কেনার অর্ডার দিয়েছেন। এরপর কোম্পানি বলেছে, বছরের প্রথম চতুর্থাংশে কয়েক লাখ ডোজ সরবরাহ দেয়ার চেষ্টা করবে।আগামী সপ্তাহে ২০ লাখ ডোজ সরবরাহ দেবে এস্ট্রাজেনেকা। এরপর উৎপাদন আরো বাড়ানো হবে। জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে আরো ২০ লাখ ডোজ টিকা সরবরাহ দেয়া হবে। ব্রিটিশ গবেষকরা লন্ডন এবং আশপাশের অঞ্চলে যে ভাইরাসের বিস্তার দেখছেন, সেটিকে তারা নিউ ভ্যারিয়েন্ট, অর্থাৎ নতুন বৈশিষ্ট্যের ভাইরাস বলে বর্ণনা করছেন। এ ভাইরাস ধরা পড়ার পর আবারো গোটা বিশ্বে একটি সতর্কতা জারি হয়েছে।
এদিকে, করোনার ভয়বহতার জন্য ২ জানুয়ারি থেকে যুক্তরাজ্যের সাথে সব ধরনের বিমান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে তার্কিস এয়ারলাইন্স। করোনা মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে চলমান অচলাবস্থায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে আঙ্কারা। বাংলাদেশও বিমান চলাচল বন্ধের চিন্তাভাবনা করছে।(ভয়েস অব পিপল)