• ২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২৩শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

ব্রিটিশ হোম সেক্রেটারী প্রীতি পাটেলের স্বামীর অর্থ উপার্জনের উৎস নিয়ে তোলপাড়

bilatbanglanews.com
প্রকাশিত নভেম্বর ৩০, ২০২০
ব্রিটিশ হোম সেক্রেটারী প্রীতি পাটেলের স্বামীর অর্থ উপার্জনের উৎস নিয়ে তোলপাড়

বিবিএন নিউজ ডেস্ক : সরকারী আচরণ বিধি লঙ্ঘন এবং প্রশাসনের কর্মকর্তা কর্মচারীদের বুলিংয়ের অভিযোগে সাম্প্রতিক সময়ে বেশ আলোচিত ব্রিটিশ হোম সেক্রেটারী প্রীতি পাটেলের স্বামীর নাম এল্যাক্স সোয়ের। বেশ কয়েকবার তিনি নিজেও সংবাদ মাধ্যমের নজর কেড়েছেন। সংবাদ মাধ্যমে তাকে নিয়ে আলোচনার প্রধান কারণ ছিল তার অর্থ উপার্জন নিয়ে।

২০০৪ সালে হোম সেক্রেটারী প্রীতি পাটেল এবং এল্যাক্স সোয়ের বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। এই দম্পতির ১২ বছরের এক ছেলে সন্তান রয়েছে।

এল্যাক্স সোয়ের মূলত একজন মার্কেটিং কনসালটেন্ট। পাশাপাশি তিনি সাউথ ইস্ট লন্ডনের বেক্সলি কাউন্সিলের নির্বাচিত টোরি দলীয় কাউন্সিলর। কিন্তু তিনি আলোচনায় ছিলেন স্ত্রী প্রীতি পাটেলের অফিসে বছরে প্রায় ২৫ হাজার পাউন্ডের বিনিময়ে পার্ট টাইম ওয়ার্কার হিসেবে কাজ করার কারণে।

২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত প্রীতি পাটেলের অফিসে পার্ট টাইম কাজ করেছেন স্বামী এল্যাক্স। বছরে ২৫ হাজার পাউন্ড বেতন ছিল তার। প্রীতি পাটেল ইন্টার ন্যাশনাল ডেভোলাপমেন্ট সেক্রেটারীর দায়িত্ব নেওয়ার পর বিষয়টি সামনে নিয়ে আসে দ্যা টাইমস। এরপর থেকে পার্টির সাথে সম্পৃক্ততা রয়েছে এমন কাউকে স্টাফ হিসেবে নিয়োগ দিতে রাজনীতিবিদদের উপর নিষেজ্ঞা আরোপ করে দ্যা ইন্ডিপেনেডন্ট পার্লামেন্টারী স্ট্যান্ডার্ড অথোরিটি।

তবে প্রীতি পাটেলের স্বামী এল্যাক্স সোয়ের আমেরিক ভিত্তিক ফাইনান্সিয়াল ফার্ম নাসডাক এনএলএস’র মার্কেটিং কনসালটেন্স হিসেবে কাজ করছেন। এটাই তার আয়ের প্রধান উৎস। নিউইয়র্ক স্টকএক্সচেন্জের তালিকাভুক্ত দ্বিতীয় শীর্ষ কোম্পানী হল নাসডাক। এছাড়াও তিনি ব্রেক্সসি কাউন্সিলের কেবিনেটে মেম্বার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।

 

ব্রিটিশ হোম সেক্রেটারী প্রীতি পাটেল মন্ত্রনালয়ের স্টাফদের সঙ্গে সরকারী আচরন বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে সাম্প্রতিক সময়ে বেশ আলোচিত। হোম সেক্রেটারীর বিরুদ্ধে প্রথম এবং প্রকাশ্যে সরকারী আচরন বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ আনেন হোম অফিসের সাবেক পার্মানেন্ট সেক্রেটারী স্যার ফিলিপ রথম্যান। ২০১৭ সাল থেকে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তিনি এই পদে ছিলেন।  হোম সেক্রেটারী প্রীতি পাটেল সরকারী আচরন বিধি লঙ্ঘন করে জন প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে চিৎকার এবং গালিগালাজ করেন বলে অভিযোগ করে গত ২৯ ফেব্রুয়ারী স্যার ফিলিপ পদত্যাগ করে তার ৩০ বছরের সরকারী কর্মজীবনের অবসান ঘটান। এরপর হোম সেক্রেটারীর বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ নিয়ে স্বতন্ত্র তদন্তের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর উপদেস্টা স্যার এল্যাক্স এলান দীর্ঘ তদন্ত শেষে রিপোর্টে হোম সেক্রেটারী প্রীতি পাটেল সরকারী আচরন বিধি লঙ্ঘন করেছেন এবং কোন কোন ক্ষেত্রে তা বুলিংয়ের পর্যায়ে ছিল বলে গত ১৯ নভেম্বর প্রকাশিত রিপোর্টে উল্লেখ করেন। তবে রিপোর্ট প্রকাশের পর অবশ্য প্রধানমন্ত্রী হোম সেক্রেটারীকেই সমর্থন করেন এবং তদন্ত রিপোর্টটি ফাইল বন্ধি করার নির্দেশ দেন। প্রধানমন্ত্রীর সমর্থন পেয়ে হোম সেক্রেটারী পদত্যাগ না করলেও দু:খ প্রকাশ করেন। তবে তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশের পর  যেখানে হোম সেক্রেটারীর পদত্যাগ করার কথা সেখানে তিনি প্রধানমন্ত্রীর সমর্থন পান। আর তাতে ক্ষুব্ধ হয়ে তদন্তকারী এবং সরকারী আচরন বিধি বিষয়ক প্রধানমন্ত্রীর উপদেস্টা স্যার এল্যাক্স এলান নিজেই পদত্যাগ করেন।

শুধু হোম অফিসেই নয়, ডিএফআইডি এবং ডিডাব্লিউপি’তেও তিনি সরকারী আচরন বিধি লঙ্ঘন করেছেন বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।

২০১৯ সালের ২৪ জুলাই প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের কেবিনেটে হোম সেক্রেটারী হিসেবে দায়িত্ব নেবার আগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী থেরিসা মে’র কেবিনেটে ২০১৬ সালের ১৪ জুলাই থেকে ২০১৭ সালের ৮ নভেম্বর ইন্টারন্যাশনাল ডেভোলাপমেন্ট সেক্রেটারী ছিলেন। এ সময় ছুটি কাটাতে ইসরায়েলে গিয়ে সরকারী আচরন বিধি লঙ্ঘন করে ইসরায়েলী প্রধানমন্ত্রীসহ বিভিন্ন মন্ত্রী এবং শীর্ষ ইসরায়েলী কর্মকর্তার সালে অন্তত ১৪ টি বৈঠক করেন। প্রধানমন্ত্রীকে না জানিয়ে ইসরায়েলের বেদখলে থাকা সিরিয়ান ভূমি গোলান সফর করেন তিনি। এরপর কেবিনেট থেকে বরখাস্ত হন প্রীতি পাটেল।

কনজারভেটিভ পার্টির ভেতরে কট্টর ডানপন্থীদের একজন হলেন প্রীতি পাটেল। তিনি সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থেচারের আদর্শে বিশ্বাসী।(ব্রিট বাংলা)