বিবি এন নিউজ সিলেটঃ সিলেটের বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়া ভারতে পালিয়ে গেছেন বলে নিশ্চিত হয়েছেন গোয়েন্দারা। তাকে পালাতে সাহায্য করে হেলাল আহমদ নামে এক চোরাকারবারি। আকবরের সঙ্গে তার আত্মীয়, সংবাদকর্মী আবদুল্লাহ আল নোমানও ছিলেন বলে জানা গেছে। ইতোমধ্যে হেলালের মাধ্যমে আকবর ও নোমান যে দেশ ছেড়েছেন- তা নিশ্চিত হয়েছে গোয়েন্দা সংস্থা ও মামলার তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। হেলালকে ২২ অক্টোবর একটি মামলায় গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
১১ অক্টোবর রাতে নগরীর আখালিয়ার নেহারিপাড়ার রায়হান আহমদকে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতন ও তার মৃত্যুর পর ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন গা-ঢাকা দেন। ১৩ অক্টোবর বিকেলে তিনি এসএমপির তদন্ত কমিটির মুখোমুখি হওয়ার পরই ওইদিন রাত থেকে গায়েব হয়ে যান। তার আগে নগরীর মদিনা মার্কেট এলাকার কালীবাড়ি রাস্তার মুখে ফুলকলি নামের একটি মিষ্টির দোকানে তাকে দেখা গেছে। সিসিটিভি ফুটেজে রাত ৯টা ১৫ মিনিটের সময় সমবয়সী আরেক ব্যক্তির সঙ্গে নাশতা করতে দেখা যায় আকবরকে। ওইসময় তিনি মোবাইল ফোনে কার সঙ্গে যেন কথা বলছিলেন। এর আগে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ি ছাড়ার আগে সেখানকার সিসিটিভির হার্ডডিস্কও পরিবর্তন করেন আকবর। ফাঁড়ির টুআইসি এসআই হাসান উদ্দিন ও সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের বুড়িডহর গ্রামের বাসিন্দা সংবাদকর্মী আবদুল্লাহ আল নোমানের সহযোগিতায় ওই কাজটি করেন তিনি। ইতোমধ্যে হাসানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
সম্প্রতি ‘এসআই আকবর কি দেশ ছেড়েছেন’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশের পর পুলিশ সদর দপ্তর থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে গত মঙ্গলবার প্রতিবেদনও দাখিল করা হয়েছে। পাশাপাশি আকবরের অবস্থান নিশ্চিতে কাজ শুরু করে পুলিশ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা। সম্প্রতি এসআই আকবর যে সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়েছেন, সে বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ। এ প্রসঙ্গে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (গণমাধ্যম) আশরাফ উল্যাহ তাহের জানান, আকবরকে সীমান্তে পালাতে সহায়তাকারী হেলাল নামে এক ব্যক্তির সংশ্নিষ্টতা রয়েছে। তাকে অন্য একটি মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে আকবর ও নোমান কোন জায়গায় রয়েছেন, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
সূত্রমতে, খালাতো ভাই আবদুল্লাহ আল নোমান আকবরকে নিয়ে ১৪-১৫ অক্টোবরের মধ্যে চোরাকারবারি হেলাল আহমদের বাড়ি যান। হেলাল উপজেলার বরমসিদ্ধিপুর গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য আবদুল করিমের ছেলে। নোমানের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে হেলাল তাকে সহযোগিতা করে। হেলাল ভারতের বড়পুঞ্জি বাজার এলাকার আরাকান নামে এক খাসিয়া মেয়েকে বিয়ে করে। সেই সুবাদে ভারতে তার অবাধ যাতায়াত ছিল। সিলেট থেকে পালিয়ে কোম্পানীগঞ্জের কালীবাড়ি গ্রামে প্রথমদিন আকবর ও নোমান অবস্থান করেন। পরদিন মোটরসাইকেলে হেলালের বাড়িতে গিয়ে রাত যাপন করেন তারা। ওইদিন সকালে সীমান্ত ১২৫৫নং পিলার এলাকা দিয়ে পালিয়ে যান আকবর ও নোমান। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর হেলালকে ২২ অক্টোবর দুপুরে গ্রেপ্তার করে পুলিশের একটি বিশেষ দল।কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি কেএম নজরুল ইসলাম বলেন, হেলালকে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এসআই আকবর পলায়নে তার সংশ্নিষ্টতার বিষয়টি তদন্ত করছে পিবিআই। এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইর পরিদর্শক মোহাম্মদ মহিদুল ইসলামের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তার বক্তব্য মেলেনি।
সূত্র: সমকাল