• ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

ইউরোপে বাড়ছে করোনা ভাইরাস, ধাপে ধাপে আসছে বিধিনিষেধ

bilatbanglanews.com
প্রকাশিত অক্টোবর ১৬, ২০২০
ইউরোপে বাড়ছে করোনা ভাইরাস, ধাপে ধাপে আসছে বিধিনিষেধ

ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার আবারো বাড়তে থাকায় বিভিন্ন সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

অগাস্ট ও সেপ্টেম্বরে সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পাওয়ায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে গত কিছুদিন ধরে দ্বিতীয় দফা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

যদিও বৃহস্পতিবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইউরোপিয়ান বিভাগের পরিচালক ডা. হানস ক্লুগে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মার্চ-এপ্রিল মাসে করোনাভাইরাসের প্রথম দফা সংক্রমণের সময়ের চেয়ে বর্তমানে মৃত্যুর হার পাঁচগুণ কম।

তার মতে, গত কয়েক সপ্তাহে সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণ তরুণদের মধ্যে কোভিড পজিটিভ হওয়ার হার বেড়েছে, যেই বয়সের মানুষের কোভিড সংক্রমণে মারা যাওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। এ কারণে সংক্রমণের হার বাড়লেও মৃত্যুর হার কমেছে বলে ধারণা প্রকাশ করেন হানস ক্লুগে।

তবে তিনি এই মন্তব্যও করেছেন যে করেন যে, ইউরোপে কোভিড সংক্রমণের যে ধারা দেখা যাচ্ছে তা ‘আশাবাদী হওয়ার মত নয়’।

তার মতে, ইউরোপের দেশগুলোর সরকার যদি তাদের বিধিনিষেধ শিথিল করে দেয় তাহলে জানুয়ারি মাসের মধ্যে প্রতিদিনের মৃত্যুর হার এবছরের এপ্রিলের তুলনায় চার থেকে পাঁচ গুণ বেড়ে যেতে পারে।

কিন্তু ৯৫% মানুষ যদি মাস্ক পড়ে এবং সামাজিক দূরত্ব মেনে চলে তাহলে আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে ২ লাখ ৮১ হাজার মানুষের মৃত্যু ঠেকানো সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন মি. ক্লুগে।

ফ্রান্স, পর্তুগাল, ইতালি, জার্মানিসহ বেশ কয়েকটি দেশে গত কিছুদিন ধরে সংক্রমণ বাড়তে থাকায় কোয়ারেন্টিন, সামাজিক দূরত্ব মানার মত বিষয়গুলোতে আবারো কড়াকড়ি করা হয়েছে।

ফ্রান্স

করোনাভাইরোস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে শনিবার থেকে প্যারিস সহ ফ্রান্সের আটটি শহরে রাত্রিকালীন কারফিউ জারি করা হয়েছে। আর তার একদিন আগে বৃহস্পতিবার ফ্রান্সে নতুন করে করোনাভাইরাস আক্রান্ত শনাক্তের সংখ্যা লাফিয়ে বেড়েছে।

বুধবার ফ্রান্সে নতুন কোভিড আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে ৩০,৬২১ জন, যা আগের দিনই ছিল ২২,৫৯১ জন।

ফ্রান্সের আটটি শহরে রাত ৯ টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারির সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে শনিবার থেকে। অন্তত চার সপ্তাহব্যাপী এই সময়ের মধ্যে নাগরিকরা ‘উপযুক্ত’ কারণ ছাড়া বাইরে বের হতে পারবেন না বলে জানানো হয়েছে।

প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রঁ বলেছেন, দৈনিক নতুন সংক্রমণের সংখ্যা ৩ হাজারে নামিয়ে আনতে চান তিনি।

ইতালি

ফ্রান্সের মত ইতালিতেও বৃহস্পতিবার নুতন সংক্রমণের সংখ্যা বেড়েছে।

দেশটির দক্ষিণ কামপানিয়া অঞ্চলে এবং নেপলস শহরে সব স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে দুই সপ্তাহের জন্য।

চেক প্রজাতন্ত্র

ইউরোপে সর্বোচ্চ সংক্রমণের হার এই মুহূর্তে চেক প্রজাতন্ত্রে, সেখানে অক্টোবরে করোনাভাইরাসের নতুন সংক্রমণের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।

চেক প্রজাতন্ত্রে স্কুল ও বার বন্ধ করে দেয়া হলেও সংক্রমণ বাড়ছে।

চেক সরকার রোগীদের জন্য প্রথম ফিল্ড হাসপাতাল তৈরি করার কথা জানিয়েছে এবং বিদেশে কর্মরত চিকিৎসকদের দেশে ফেরার আহ্বান জানিয়েছে।

জার্মানি

বৃহস্পতিবার নতুন ৬,৬৩৮ জন করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে জার্মানিতে, যা মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে দৈনিক সংক্রমণের হিসেবে সর্বোচ্চ।

জার্মানিতে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বার এবং ক্লাব নির্ধারিত সময়ের আগেই বন্ধ করে দেয়ার বিষয়ে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

পর্তুগাল

বৃহস্পতিবার থেকে পর্তুগালে একসাথে পাঁচজনের বেশি জড়ো হতে পারবে না বলে সিদ্ধান্ত দিয়েছে দেশটির সরকার।

পাশাপাশি বিয়ে এবং ব্যাপটিজমের অনুষ্ঠানে সর্বোচ্চ ৫০ জন জড়ে হতে পারবে বলে জানানো হয়েছে। নিষিদ্ধ করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্টি।