• ১৮ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ৪ঠা আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ২২শে জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি

শিরশ্ছেদ ও যৌনদাসী প্রথার নিন্দা জানাতে অস্বীকার শামীমা বেগমের জিহাদি স্বামীর

bilatbanglanews.com
প্রকাশিত নভেম্বর ৯, ২০২১
শিরশ্ছেদ ও যৌনদাসী প্রথার নিন্দা জানাতে অস্বীকার শামীমা বেগমের জিহাদি স্বামীর

বিবিএন ডেস্ক:  ইসলামিক স্টেটের শিরশ্ছেদ ও যৌনদাসী প্রথার নিন্দা জানাতে অস্বীকার করেছেন আইএস বধূ খ্যাত শামিমা বেগমের জিহাদি স্বামী। তিনি এখনো স্বপ্ন দেখেন কোনো একদিন ইসলামিক স্টেটের কথিত খেলাফত প্রতিষ্ঠিত হবে। বর্তমানে সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় কুর্দিদের পরিচালিত আল-রোজ কারাগারে বন্দি রয়েছেন শামিমা বেগমের স্বামী ইয়াগো রিয়েদিজক (২৯)। সেখান থেকেই দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।

বৃটিশ গণমাধ্যম ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ওই সাক্ষাৎকারে শামীমার সঙ্গে তার বৈবাহিক জীবনকে ‘সুন্দর’ বলে আখ্যায়িত করেন আইএস জিহাদি ইয়াগো। এতে তিনি বলেন, পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলোতে ইসলামিক স্টেট যেসব হামলা চালিয়েছে তাকে তিনি ‘ইসলামিক দায়িত্ব’ মনে করেন না। কারণ, এসব হামলায় অনেক নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, যা ‘ইসলামে নিষিদ্ধ’। কিন্তু একই সঙ্গে ইয়াজিদিদের উপর ইসলামিক স্টেট যে নৃশংসতা চালিয়েছে তার নিন্দা জানাতে অস্বীকৃতি জানান ইয়াগো।

তাদের কথিত খেলাফত টিকে থাকার সময় জিহাদি সংগঠনটি ইয়াজিদিদের বিরুদ্ধে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে এবং ইয়াজিদি মেয়েদের যৌনদাসী হিসাবে বিক্রি করেছে। ইয়াগো ইসলামিক স্টেটের শিরñেদের নিন্দা জানাতেও অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। তাকে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এ নিয়ে আমি কোনো কিছু বলতে পারছি না। উল্লেখ্য, এখনো ২ হাজার ৮০০ জনেরও বেশি ইয়াজিদি নারী ও শিশু নিখোঁজ রয়েছে।

২৯ বছর বয়সী এই জিহাদি জানান, ইসলামিক স্টেট ধ্বংস হয়ে গেছে এটি তিনি বিশ্বাস করেন না। বরঞ্চ তার বিশ্বাস, শীগগিরই আবারো খেলাফত প্রতিষ্ঠা করে তাতে ইসলামি সব নিয়ম কানুন চালু করবে সংগঠনটি। তাকে শামীমা বেগমের সঙ্গে তার বৈবাহিক জীবন নিয়েও প্রশ্ন করা হয়। এসময় তিনি হেসে ওঠেন এবং খেলাফতের মধ্যে তাদের পরিবারকে ‘সুন্দর স্মৃতি’ হিসাবে আখ্যায়িত করেন। ২০১৫ সালে শামিমা বেগম ইসলামিক স্টেটে যোগ দিতে বৃটেন থেকে পালিয়ে সিরিয়ায় আসেন। সিরিয়ায় পৌঁছানোর কয়েক দিনের মাথায় ১৫ বছর বয়সী শামীমাকে বিয়ে করেন ডাচ বংশোদ্ভূত এই জিহাদি। এই দম্পতির তিন সন্তান ছিল কিন্তু তাদের সকলেই মারা গেছে।

ইয়াগো বলেন, সিরিয়ায় পৌঁছানোর কয়েক দিন পরই শামিমাকে তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন তিনি। তার ভাষায়, বিয়ে করা কঠিন কিছু ছিল না। এটি ছিল অনেকটা বাজার করার মতো সাধারণ বিষয়। শামীমাকে প্রস্তাব দেয়ার পর সে কিছু স্বাধীনতা চেয়েছিল যেমন বাজারে যাওয়া বা বন্ধুদের দেখতে চাওয়ার মতো বিষয়গুলো। আমি এগুলো মেনে নিতে সম্মত হলে বিয়ে চূড়ান্ত হয় আমাদের মধ্যে। ইয়াগো আরও বলেন, শামীমা আমার কাছে কোরানের একটি ইংরেজি অনুবাদ চেয়েছিল বিয়ের সময়। তার সঙ্গে বিয়ের পর আমার সময়গুলো ছিল অসাধারণ। সেগুলো এখন আমার সুন্দর স্মৃতি। এখনো শামীমার সঙ্গে নতুন করে সব শুরু করতে চান ইয়াগো।

এদিকে, শামীমা বেগমও এখন আল-রোজের একটি কুর্দি পরিচালিত শরনার্থী শিবিরে রয়েছেন। ২০১৯ সালে জিহাদি সংগঠনে যোগ দেয়ার কারণে তার বৃটিশ নাগরিকত্ব বাতিল করা হয়। তিনি অবশ্য নিজেকে সকল ধরণের উগ্রবাদ থেকে মুক্ত বলে দাবি করছেন। একইসঙ্গে বৃটেনে ফিরে আসার জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। অপরদিকে ইয়াগোকে ২০১৮ সালেই নেদারল্যান্ডের আদালত অভিযুক্ত করেছে। তিনি যদি ইউরোপে প্রবেশ করে তাহলে তাকে ৬ বছরের কারাদণ্ডের রায় দিয়েছে আদালত।